বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম ।
আমি তারায় তারায় রটিয়ে দিব …………
বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম ।
জানিস দোস্ত গতকাল না কঠিন একটা পাপ করে ফেলেছি । গতকাল রুমে কেউ ছিল না , দরজাটা বন্ধ করে , অনলাইনে যেয়ে ………
ভাই থামেন , আর কথা বাড়াইয়েন না । আপনার যে পাপ কাজের কথা আল্লাহ(সুবঃ) ছাড়া আর কোন কাক পক্ষীও টের পায়নি ,আপনার যে পাপ আল্লাহ (সুবঃ) গোপন করে রেখেছিলেন মানুষের কাছ থেকে, সেটা আপনি নিজে সকলের সামনে প্রকাশ করে দিয়ে , নিজের কি সর্বনাশ করছেন জানলে মাথার চুল একটা একটা করে ছিড়ে চান্দু হয়ে যেতেন তারপরেও আক্ষেপ ফুরাতো না ।
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন – আমার সকল উম্মত মাফ পাবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই ধৃষ্টতা যে, কোন ব্যক্তি রাতে অপরাধ করল যা আল্লাহ্ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে ভোর হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এমন এমন কর্ম করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত অতিবাহিত করল যে, আল্লাহ্ তার কর্ম গোপন রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহ্’র পর্দা খুলে ফেলল। [সহীহ বুখারি]
আরেকটা বর্ণনায়[১] এসেছে – আল্লাহ (সুবঃ) হাশরের ময়দানে ফেরেশতাদের বলবেন যাও আমার অমুক অমুক বান্দাকে ডেকে নিয়ে এসো । ফেরেশতাগন বান্দাদেরকে নিয়ে এসে আল্লাহ (সুবঃ) এর সামনে দাঁড় করিয়ে দিবেন । আল্লাহ (সুবঃ) বান্দাদেরকে বলবেন ,“ হে আমার বান্দা! আমার কাছে এসো । বান্দা আল্লাহ’র (সুবঃ) কাছে এসে দাঁড়াবে আল্লাহ (সুবঃ) বান্দাকে আরো কাছে ডাকবেন । বান্দা আল্লাহ’র (সুবঃ) আরো কাছে যেয়ে দাঁড়াবে । এভাবে বান্দা আল্লাহ’র (সুবঃ) এতো কাছে চলে যাবে যে সে নুর দ্বারা আচ্ছাদিত হয়ে যাবে । আল্লাহ্ (সুবঃ) এবং তার মাঝে শুধু একটা পর্দা থাকবে । কোন ফেরেশতা তাকে আর দেখতেও পাবে না , শুনতেও পাবে না আল্লাহ্ (সুবঃ) এবং বান্দার কথোপকথন ।
শুধু আল্লাহ্ (সুবঃ) আর তাঁর বান্দা ।
আল্লাহ্ (সুবঃ) তাঁর বান্দাকে বলবেন , “ইয়া আব্দি , দেখ তোমার আমলনামা ,তুমি নিজেই দেখ পৃথিবীতে কি করে এসেছো তুমি” ।
বান্দা তার আমলনামায় চোখ বুলাবে – শুধু পাপ আর পাপ , রাশি রাশি পাপ ।
আল্লাহ্ (সুবঃ) বলবেন ,“ ইয়া আব্দি ,তুমি কি জানতে না তুমি গোপনে যে কাজ কর আমি সেটাও দেখতে পাই ? তুমি কি জানতে না একদিন তোমাকে আমার সামনে দাঁড়াতে হবে ? তুমি কি জানতে না একদিন আমি তোমার সব কাজের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করব ?
বান্দা উত্তর দিবে , “ইয়া রব্ব! আমি জানতাম , জানতাম ……… আমি জানতাম” ।
আল্লাহ্ (সুবঃ) বলবেন,“ তাহলে কেন তুমি এই কাজ গুলো করেছিলে ? কেন” ?
বান্দা উত্তর দিবে , “ইয়া রব্ব! আপানর সামনে এই পাপের বোঝা নিয়ে দাঁড়িয়ে আমার বিচার করার চেয়ে আমাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা আপনার জন্য অনেক সহজ”।
আল্লাহ্ (সুবঃ) বলবেন,“ পাতা উল্টাও , পরের পৃষ্ঠায় যাও”।
বান্দা পরের পাতায় যেয়ে দেখবে পুরোটাই আগের চেয়েও জঘন্য গুনাহ দ্বারা পরিপূর্ণ । এভাবে সে পুরো আমলনামার পাতা উল্টিয়ে ফেলবে । প্রত্যেকটা পাতাতেই আগের পাতার চেয়ে আরো বেশী , আরো জঘন্য গুনাহ দেখতে পাবে সে । বান্দা প্রচন্ড মন খারাপ করে ফেলবে । প্রচন্ড হতাশ হয়ে সে ভাববে – আমাকে আল্লাহ্ (সুবঃ) নিশ্চয়ই এখনো জাহান্নামের আগুনের গর্তে ফেলে দিবেন । আমি তো ভালো আমলও করেছিলাম ,কিন্তু সেগুলো আমার কাজে আসলো কই ? আমার পাপই আমাকে ধ্বংস করে ছাড়লো!
আল্লাহ্ (সুবঃ) বান্দাকে বলবেন , “ ইয়া আব্দি! তুমি কেন তোমার পাপকাজ গুলো গোপন করে রেখেছিলে দুনিয়ার জীবনে”?
বান্দ জবাব দেবে , “ ইয়া রব্ব! আমি আমার পাপগুলো নিয়ে লজ্জিত ছিলাম’।
আল্লাহ্ (সুবঃ) বলবেন ,“ তুমি কি দেখনি পৃথিবীতে আমি তোমার পাপগুল মানুষের নিকট থেকে গোপন করে রেখেছিলাম । এটা ছিল তোমার প্রতি আমার রহমাহ । আজকেও আমি তোমার পাপগুলো মানুষের নিকট থেকে গোপন করে রাখবো” ।
[ অন্য একটা বর্ণনায় এসেছে – আল্লাহ্ (সুবঃ) বলবেন , “দুনিয়াতে তুমি তোমার মুসলিম ভাইয়ের দোষ গোপন করে রাখতে, তাই আজকে আমিও তোমার দোষ গোপন করে রাখব” ।]
আল্লাহ্ (সুবঃ) বান্দাকে বলবেন , “এবার আমলনামার পাতা উল্টাও” ।
আমলনামা খুলতেই বান্দার চোখ কপালে উঠে যাবে । পুরো আমলনামা জুড়েই শুধু ভালো কাজ । পাপকাজ গুলোর টিকিরও খোঁজ নেই ।
ফেরেশতারাও জানবে না যে আল্লাহ্ (সুবঃ) বান্দার সমস্ত পাপ আমলনামা থেকে মুছে ফেলে ভালো কাজ দিয়ে পূর্ণ করে দিয়েছেন ।
অতঃপর বান্দাকে মাফ করে দেওয়া হবে । [সহীহ বুখারি]
ভাই , পর্নমুভি দেখা বা মাস্টারবেট করা ছাড়তে না পারলেও চেষ্টা করুন এগুলো সবার নিকট থেকে গোপন করে রাখতে , আল্লাহ্ (সুবঃ) ছাড়া পাপের কোন সাক্ষী না রাখতে । আল্লাহ্’র (সুবঃ) দয়া হলে তিনি হয়তো আপনার এই গোপন পাপ গুলো দুনিয়াতেও গোপন রাখবেন এবং হাশরের ময়দানেও গোপন রেখে আপনাকে ক্ষমা করে দিবেন । অযথা সবাইকে বলে বেড়িয়ে কেন ক্ষমা পাবার এই সুযোগটা হারাবেন ?
বন্ধুদের সঙ্গে বসে পর্ন দেখে , মেয়েদের ফিগার বিশ্লেষণ করে বা কোন কারণ ছাড়াই [২] স্রেফ মজা করার জন্য বন্ধুদের সঙ্গে কে কত পর্ন দেখে , কার কত জিবি কালেকশান , কে কতবার মাস্টারবেট করে এগুলো নিয়ে আলোচনা করে নিজেই নিজের পায়ে কুড়াল মারবেন না, ভাই । একদিন আফসোস করতে হবে এই সব “ফান” করার জন্য । কিন্তু তখন কিছুই করার থাকবেনা ।
কিছুই করার থাকবেনা ……
পড়ে দেখতে পারেন – ডেস্টিনি – https://bit.ly/2MqWqLv
রেফারেন্সঃ
[১] https://www.youtube.com/watch?v=W58xj93ljPM
[২] পর্ন মুভি/ মাস্টারবেশন আসক্তি ছাড়ার জন্য কোন দ্বীনি ভাই , বন্ধু বা কাছের কোন মানুষের সাহায্য নেওয়া খুব জরুরী । একা একা আসক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার চেয়ে জোট বেঁধে লড়াই করা অনেক অনেক গুন ভালো । তারমানে এই নয় যে , আপনি যদু কদু মধু সবাইকে বলে বেড়াবেন আপনার পর্ন আসক্তি/ মাস্টারবেশন আসক্তির কথা , আর সবার কাছ থেকে সিমপ্যাথি পাবার চেষ্টা করবেন ।
আসসালামুআলাইকু, কেও যদি চেষ্টা করে তার গোনাহগুলো গোপন রাখতে,কিন্তু বন্ধুরা অনেক সময় মোবাইলের হিস্টরি স্ক্রিনশট নিয়ে রাখে পরে ব্ল্যাকমেইল করে,তার ব্যাপারে কী হবে জানতে চাচ্ছি?
Al-Hujurat 49:11
Arabic
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِّن قَوْمٍ عَسَىٰٓ أَن يَكُونُواۡ خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَآءٌ مِّن نِّسَآءٍ عَسَىٰٓ أَن يَكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّۖ وَلَا تَلْمِزُوٓاۡ أَنفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُواۡ بِٱلْأَلْقَٰبِۖ بِئْسَ ٱلِٱسْمُ ٱلْفُسُوقُ بَعْدَ ٱلْإِيمَٰنِۚ وَمَن لَّمْ يَتُبْ فَأُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلظَّٰلِمُونَ
Bengali
হে বিশ্বাসীগণ! একদল পুরুষ যেন অপর একদল পুরুষকে উপহাস না করে; কেননা যাদেরকে উপহাস করা হয়, তারা উপহাসকারী দল অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং একদল নারী যেন অপর একদল নারীকেও উপহাস না করে; কেননা যাদেরকে উপহাস করা হয়, তারা উপহাসকারিণী দল অপেক্ষা উত্তম হতে পারে।[১] আর তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না[২] এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না;[৩] কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাকে মন্দ নামে ডাকা গর্হিত কাজ।[৪] যারা (এ ধরনের আচরণ হতে) নিবৃত্ত না হয় তারাই সীমালংঘনকারী।
[১] এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির সাথে উপহাস বা ঠাট্টা-বিদ্রূপ তখনই করে, যখন সে নিজেকে তার চাইতে উত্তম এবং তাকে নিজের চেয়ে হীন ও ছোট মনে করে। অথচ আল্লাহর কাছে ঈমান ও আমলের দিক দিয়ে কে উত্তম, আর কে নয় –এ জ্ঞান কেবল তাঁরই কাছে। কাজেই নিজেকে উৎকৃষ্ট এবং অপরকে নিকৃষ্ট মনে করার কোনই বৈধতা নেই। তাই আয়াতে অপরকে উপহাস করা হতে নিষেধ করা হয়েছে। আর চারিত্রিক এ রোগ মহিলাদের মধ্যে অধিকহারে বিদ্যমান থাকায় তাদের কথা পৃথকভাবে উল্লেখ করে বিশেষভাবে তাদেরকে এ কাজ থেকে নিষেধ করা হয়েছে। রসূল (সাঃ)-এর হাদীসে মানুষকে তুচ্ছ মনে করাকে ‘অহংকার’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে, (الْكِبْرُ بَطَرُ الْحَقِّ وَغَمْطُ النَّاسِ) (মুসলিম ৯১নং, তিরমিযী, হাকেম ১/২৬) আর অহংকার ও অহংকারীকে আল্লাহ চরম ঘৃণা করেন।
[২] অর্থাৎ, কোন দোষ বা ত্রুটি ধরে একে অপরকে খোঁটা দিও না। যেমন বলা, তুই তো অমুকের বেটা না, তোর মা তো এ রকম ও রকম, তুই তো অমুক বংশের না! ইত্যাদি।
[৩] অর্থাৎ, ব্যঙ্গ ও তুচ্ছজ্ঞান করে মানুষের এমন নাম রেখো না (বা এমন খেতাব বের করো না), যা সে পছন্দ করে না। অথবা তার ভাল ও সুন্দর নামকে বিকৃত করে ডেকো না।
[৪] অর্থাৎ, এইভাবে নাম বিকৃত করে অথবা মন্দ নাম বা খেতাব রেখে সেই নামে ডাকা, কিংবা ইসলাম গ্রহণ বা তওবা করার পর তাকে অতীত ধর্ম বা পাপের সাথে সম্পৃক্ত করে সম্বোধন করা; যেমন, এ কাফের! এ ইয়াহুদী! এ লম্পট! এ মাতাল! ইত্যাদি বলে সম্বোধন করা অতীব মন্দ ও গর্হিত কাজ। الاسْم এখানে الذِّكْرُ অর্থে ব্যবহার হয়েছে। অর্থাৎ, بِئْسَ الاسْمُ الَّذِيْ يُذْكَرُ بِالفِسْقِ بَعْد دُخُوْلِهِمْ فِي الإِيْمَانِ (فتخ القدير) অবশ্য কোন কোন গুণগত নাম কারো কারো নিকট এ নিষেধের আওতাভুক্ত নয়, যা লোক মাঝে প্রসিদ্ধ হয়ে যায় এবং সে এ নামে স্বীয় অন্তরে কোন দুঃখ বা রাগও অনুভব করে না। যেমন, খোঁড়া নামে প্রসিদ্ধ কোন খোঁড়াকে ‘খোঁড়া’ বলে ডাকা, কালিয়া অথবা কালু নামে প্রসিদ্ধ কোন কালো রঙের লোককে ‘কালিয়া’, ‘কালো’ বা ‘কালু’ বলে ডাকা ইত্যাদি। (কুরতুবী)
source Quran App:bit.ly/AlQuranApp
যারা ব্ল্যাকমেইল করছে গর্হিত কাজ করছে। যার ব্যাপারে করা হচ্ছে সে যতটুকু সম্ভব গোপন রাখবে গুনাহ। এর পর আর তার দায় থাকে না ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ্ উনার নিয়তের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল।