Published on

যৌনশিক্ষা: বাচ্চাদের কীভাবে বলা যেতে পারে

(লিখেছেন- ডা. শামসুল আরেফীন)

.

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু। কেমন আছো তোমরা সবাই? আলহামদুলিল্লাহ। আমরা সবাই ভালো আছি। এত দুর্দিনেও আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে ভালো রেখেছেন। চারিদিকে কত খুন-রাহাজানি-ধর্ষণ-অগ্নিকান্ড, এর মাঝেও আল্লাহ আমাদের আর আমাদের পরিবারের সবাইকে সুস্থ রেখেছেন, নিরাপদে রেখেছেন, এজন্য আল্লাহর লাখো কোটি শুকরিয়া। কী বলো তোমরা?

.

আজ আমরা খুব বড় একটা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করব। খুব বড় এবং খুব জটিল একটা সমস্যা। এই সমস্যাটা যদি আমরা এই ছোটবেলায়ই না ধরতে পারি, আমাদের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। আমরা যখন বড় হব, তখন সীমাহীন কষ্টে আমাদের জীবন ভরে যাবে, সে কষ্ট কাউকে বলাও যাবে না। এজন্য খুব মন দিয়ে আমাদের শুনতে হবে আজকের কথাগুলো। যত মন দিয়ে শুনবো, তত সমস্যাটা বুঝতে পারা যাবে। আর যত বুঝতে পারা যাবে, তত আমরা সেই মহাসমস্যা থেকে বাঁচতে পারব। শুনব তো সবাই?

.

তাহলে শুরু করা যাক। দেখো, আমরা ছোট ছিলাম। ছোট বেলায় আমরা খেলনা পছন্দ করতাম, রং-পেনসিল দিয়ে আঁকাআঁকি পছন্দ করতাম, কার্টুন পছন্দ করতাম। এরপর সেই বয়সটা চলে গেল। এখন তোমরা ক্রিকেট-ফুটবল পছন্দ কর। এখন তোমাকে বিল্ডিং সেট দিয়ে বসিয়ে দিলে ভালো লাগবে? লাগবে না। আমাদের পছন্দ পরিবর্তন হয়ে যায়, আবার আরেকটু বড় হলে এগুলোও ভালো লাগবে না। এর মানে, আমাদের মন-মানসিকতা বয়সের সাথে পরিবর্তন হয়।

.

শুধু তাই না। বয়সের সাথে আমাদের শরীরেও পরিবর্তন আসে। যেমন আমাদের শরীর সাইজে বড় হয়। তেমনি শরীরের ভিতরেও নানান পরিবর্তন হতে থাকে। ছেলেদের শরীরে বড় বড় পশম হয়, কণ্ঠস্বর মোটা হয়, হাড়গোড় শক্তপোক্ত হয়, শরীর পেশীবহুল হয়। তোমাদের কিন্তু এখন সেই মাঝামাঝি সময়টা চলছে। তোমরা এখন বাচ্চা থেকে পুরুষ মানুষ, বড়মানুষ হচ্ছো। এই সময়টাকে বলে ‘বয়ঃসন্ধিকাল’। বাসায় ছোটভাই আছে কার কার? খেয়াল করে দেখো তোমার আর তোমার ছোটভাইয়ের মধ্যে কত পার্থক্য। তাহলেই বুঝবে তুমি এখন বাচ্চা থেকে বড়মানুষ হচ্ছো। তোমার ঠোঁটের উপর গোঁফের রেখা আসছে, তোমার গলা মোটা হয়েছে। এসময় শরীরে খুব গন্ধ হয়, ঘামে খুব গন্ধ হয়, সেটা এসেছে, এটা চলে যাবে আরেকটু বড় হলে।

.

তবে এই পরিবর্তনগুলোর মাঝে আমাদের দুটো পরিবর্তন আছে, আমরা কাউকে বলতে পারি না, লজ্জা লাগে, তাই না? একটা হচ্ছে বাহুর নিচে বগলে আর নাভীর নিচে মোটা মোটা লোম ওঠে। এগুলো কেটে ফেলতে হয়, সপ্তাহে একবার শেভ করে ফেললে ভালো, শরীরে গন্ধ হয় না। নাহলে ঘাম আটকে থেকে গন্ধ হয়। প্রতি শুক্রবারে শেভ করার নিয়ম, আমাদের নবী আমাদের তাই শিখিয়েছেন। আর না কেটে ৪০ দিন পেরিয়ে গেলে গুনাহ লেখা হয়, শরীরে ঘাম আটকে থেকে গন্ধ হয়, কেউ কাছে আসতে চায় না, ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়া জমে ইনফেকশানও হতে পারে। আমরা প্রতি শুক্রবারে এটা শেভ করব, ঠিক আছে তো?

.

আরেকটা সমস্যা আমাদের হয়। প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে আঠালো একটা রসের মত আসে। একটু চাপ দিয়ে পেশাব করলে, বা পায়খানা একটু কষা হলে সেটা বেরিয়ে আসতে পারে। কিংবা কারো কারো রাতে ঘুমের ভেতরেও বেরিয়ে আসে, আসে কি না? এটাও খুব স্বাভাবিক, কোনো অসুখ না, একদম ভয়ের দুশ্চিন্তার কিছু নেই। তোমাদের হবে, আমাদের হয়েছে, আমাদের বাবাদের হয়েছে এই বয়সে। ঘুমের ভেতর স্পীডের সাথে বেরোলে গোসল করতে হয়। গোসলের আগ পর্যন্ত শরীর নাপাক থাকে, নামায পড়া যায় না, কুরআন ধরা যায় না, মসজিদে ঢুকা যায় না।

.

গোসলের নিয়ম হলো: প্রথমে ঐ জায়গা ধুয়ে নামাযের ওযুর মত ওযু করবে। এরপর গড়গড়াসহ কুলি করবে, গলার শেষ পর্যন্ত যেন পানি যায়। তারপর নাকের ভিতর পর্যন্ত পানি দেবে, পানি টেনে উঠাতে পারলে তো সবচেয়ে ভালো। আর লাস্টলি এমনভাবে গোসলটা করবে, যাতে প্রত্যেক লোমের নিচে পানি পৌঁছে, ডলে ডলে গোসল করবে। যাতে শরীরের কোথাও শুকনো না থাকে। আর যদি এমনি অন্য সময় স্পীডের সাথে না বেরোয়, এমনি চুঁইয়ে চুঁইয়ে আসে, তাহলে কেবল ওযু করলেই চলবে। এখন প্রশ্ন হল, এটা কেন আসে? প্রশ্ন আসছে তো?

.

চারপাশে দেখো। মানুষ দুই ধরনের: পুরুষ আর নারী। কেন দুই ধরনের? এক ধরনের কেন না? শুধু পুরুষ হতে পারত, কিংবা শুধু নারী? একপদের হলেই তো হতো? প্রশ্ন জাগে না মনে? এটা আল্লাহ তাআলার সিস্টেম। এই সিস্টেম আল্লাহ করে দিয়েছেন যাতে কিয়ামত পর্যন্ত দুটো মানুষ থেকে একটা মানুষ তৈরি হয়। একজন পুরুষ আর একজন নারী থেকে একটা নতুন মানুষ দুনিয়াতে আসে। এভাবে চলতে থাকবে। তোমার দাদা-দাদী থেকে তোমার বাবা এসেছেন। নানা-নানী থেকে তোমার আম্মু এসেছেন। আবার তোমার আব্বু-আম্মু থেকে তুমি দুনিয়াতে এসেছো। আবার তুমি-তোমার স্ত্রী থেকে আরেকটা নতুন মানুষ আসবে, যার এখন কোনো খোঁজ নেই। এভাবে তোমার বংশ চলতেই থাকবে। শুধু মানুষ না, অন্যান্য সব পশুপাখির ক্ষেত্রেও তাই। এই প্রক্রিয়াকে ইংরেজিতে বলে Reproduction, বাংলাতে ‘প্রজনন’। এটা কীভাবে হয়?

.

পুরুষ প্রাণীর শরীরে একটা বীজ তৈরি হয়, আর মেয়ে প্রাণীটার শরীরে তৈরি হয় জমি। জমিতে এই বীজ পৌঁছালে একটা নতুন সন্তান তৈরি হয়। যখন তুমি ছোট ছিলে তখন এই বীজ তৈরি হচ্ছিল না। এখন তুমি সেই বীজ তৈরির উপযুক্ত হচ্ছো, সেই বীজ তৈরি হওয়া শুরু হয়েছে তোমার শরীরে। আমাদের দেহে যে টেস্টিস/অণ্ডকোষ আছে, সেখানে তৈরি হয় এই বীজ। বীজ মজুদ রাখার একটা থলের মত জায়গাও আছে তোমার দেহে। যখন পেশাব পায়খানার সময় ঐ থলেতে চাপ পড়ে, তখন প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে একটু একটু করে বেরিয়ে আসে। এটাই ঐ আঠালো তরল, যা তুমি দেখো। কিংবা যখন তৈরি হয়ে হয়ে থলেটাতে আর ধরে না, তখন ঘুমের মাঝে উপচে বেরিয়ে আসে, যাকে বলে ‘স্বপ্নদোষ’। এটা বিলকুল কোন অসুখ না, অনেক বন্ধুবান্ধব তোমাকে বুঝাবে, এটা অসুখ। এটা কোনো অসুখই না, কোনো টেনশনের কিচ্ছু নাই। কিছুটা দুর্বল লাগতে পারে, সেজন্য তোমাকে যেটা করতে হবে, খাওয়া দাওয়া বাড়িয়ে দিতে হবে। প্রতিদিন ২ টা ডিম, দুধ, পুষ্টিকর খাবারদাবার খেতে হবে। ঠিক আছে না? বুঝতে পেরেছো সবাই? এটা নিয়ে টেনশন যদি কর, এই টেনশনটা ই শেষ পর্যন্ত রোগ হয়ে দাঁড়াবে। টেনশন না করলে তুমি অসুস্থ হবে না, সুতরাং কোনো টেনশান নয়।

.

এতক্ষণ পর্যন্ত আমরা কিন্তু নর্মাল বিষয়টা আলোচনা করলাম। এবার আমরা কিন্তু সমস্যায় প্রবেশ করছি। মন দিয়ে শুনো কিন্তু। আমাদের মাঝেই অনেক মানুষ, এমনকি তোমাদের বন্ধুরাও অনেকে এই সময়টা মারাত্মক এক খারাপ অভ্যাসে লিপ্ত হয়। তারা এই বীজ বের করে ফেলে ইচ্ছে করে। একবার থেকে বার বার। নিজ হাতে নিজের ভবিষ্যতকে শেষ করে দেয় তিলে তিলে। এই বয়সের বাজে অভ্যাস তাকে পরিণত বয়সে হতাশাগ্রস্ত একজন ব্যর্থ মানুষে পরিণত করে। একা একাই বেরিয়ে গেলে তা শরীরে খারাপ প্রভাব ফেলে না, কিন্তু নিজে ইচ্ছে করে বের করে ফেললে তা শরীরে সিরিয়াস ক্ষয় তৈরি করে। চলো দেখে নিই, এই সর্বনাশা অভ্যাসের ফলে কী কী দেখা দেয়:-

.

* শরীর দ্রুত ভেঙে পড়ে

* অকালে বুড়ো বুড়ো লাগে

* কোন কাজে আনন্দ লাগে না, সবসময় কেমন যেন বিমর্ষ লাগে।

* শরীর-মন চনমনে লাগে না, সতেজ থাকে না, ম্যাজমেজে লাগে

* কোমরে ব্যথা হয়

* মনোযোগ থাকে না পড়াশোনায়

* অল্পতেই ক্লান্ত লাগে

* পড়াশুনার রেজাল্ট খারাপ হতে থাকে, চেপে বসে হতাশা

* মাথাব্যথা করে

* চোখের দৃষ্টি কমে যেতে থাকে

* বীজ পাতলা হয়ে যায়, সন্তান হবার সম্ভাবনা কমে যায়

* লিঙ্গ নিস্তেজ হয়ে পড়ে

* লিঙ্গের গোড়া দুর্বল হয়ে পড়ে, সোজা থাকে না

* স্ত্রীমিলনে আগ্রহ কমে

* স্ত্রীর চাহিদা মেটার আগেই দ্রুত বীর্যপাত হয়ে যায়

* দাম্পত্য জীবনে ব্যর্থ পুরুষ হিসেবে সাব্যস্ত হয়

* পারিবারিক কলহ, ডিভোর্স হতে পারে

* হতাশা একাকীত্ব জীবনকে ধ্বংস করে দেয়।

.

সুতরাং ছোট্টবন্ধুরা, তোমরা বুঝতে পারছ— এই ইচ্ছা করে বীজ বের করে ফেলাটা কতটা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে। আর যদি এটা তুমি না কর, তাহলে শরীর থাকবে সতেজ, মন থাকে প্রফুল্ল। তোমার মনে হবে, যেন তুমি বিশ্ব জিতে নিতে পারো। এতোটা আত্মবিশ্বাস তোমার উপর ভর করবে। পড়াশুনা-চাকুরি-ক্যারিয়ার-দাম্পত্যজীবন সবখানে তুমি একজন সফল ব্যক্তি হবে। এখন তুমিই বেছে নাও তুমি কোনটা চাও। সবাই বলো আমরা কোনটা চাই?

.

শুধু তাই নয়, আমাদের মৃত্যুর পর এক অনন্ত জীবন শুরু। কবর-হাশর তারপর জান্নাত বা জাহান্নামের ফয়সালা হবে। এই নিজে ইচ্ছে করে বীজ বের করে ফেলা আল্লাহর কাছেও মারাত্মক বড় গুনাহ যাকে বলে কবীরা গুনাহ। অন্তর থেকে ফিরে আসার সংকল্প না করলে মানে তাওবা না করলে এই গুনাহ মাফ হয় না। বার বার কবীরা গুনাহ একসময় ঈমান চলে যাওয়ার কারণও হতে পারে। এজন্য জাহান্নামে কঠিন শাস্তির কথা এসেছে হাদিসে। এজন্য এমন কাজ, এমন অভ্যাস আমরা কেন করব যাতে দুনিয়াও শেষ হয়ে গেল, আখিরাতও শেষ হয়ে গেল। সবাই তাওবা করি আজ থেকে, আল্লাহ, আমরা এমন কাজ কখনো করব না। সবাই মন থেকে বলো। আর যাদের এই অভ্যাস আছে, তারাও তাওবা কর: বলো, আল্লাহ যা করেছি ভুল করেছি। আর কোনোদিন করবো না। বলেছো মনে মনে। মন থেকে আল্লাহকে বলতে হবে, তাঁকে কী ফাঁকি দেয়া যায়?

.

এবার আরেকটা মহাসমস্যার কথা তোমাদের শোনাবো। সেটা হলো: এই পুরুষ প্রজাতির বীজ নারী প্রজাতিতে ট্রান্সফারের জন্য একটা প্রক্রিয়া আছে। একটাই প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়েই সকল মানুষ জন্ম নেয়। পুরুষের জননাঙ্গ এবং নারীর জননাঙ্গকে একত্র করা হয় এবং বীজ দেয়া হয়। এই একটাই প্রক্রিয়া। পুরুষ নারীর প্রতি আকর্ষিত হবে, আর নারীর কাছে পুরুষদের ভালো লাগবে। এটাই নিয়ম। নারী-পুরুষের বাইরে যেকোন প্রকার জননাঙ্গ-কেন্দ্রিক আকর্ষণ হল অস্বাভাবিক ও অপরাধের কাজ। নারী-পুরুষের এই আকর্ষণ কাজে লাগিয়ে পশ্চিমা ধনী দেশগুলো কোটি কোটি ডলারের ব্যবসা করে, অশ্লীল ছবি-সিনেমার ব্যবসা। ইন্টারনেট ভর্তি করে রেখেছে এসব বাজে বাজে ছবিতে-ভিডিওতে। এগুলো যুবকেরা দেদারসে দেখছে, আর নিজের জীবনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। কীভাবে সারা দুনিয়ায় যুবকেরা ধ্বংস হচ্ছে দেখবে? দেখো—

.

  • অশ্লীল ছবি ভিডিওকে ইংরেজিতে বলে ‘পর্ন’। এখানে তারা নারী জাতিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে। নারীকে কেবলই পুরুষের ইচ্ছার দাসী হিসেবে দেখায়। যেন তার নিজের কোনো ইচ্ছে নেই, কোনো দাম নেই। যেন সে মানুষ না, কোনো বস্তু। যে এগুলো দেখে তার মনেও মেয়েদের সম্পর্কে বাজে বাজে ধারণা জেঁকে বসে।
  • এগুলোতে মানুষের শরীর সম্পর্কেও ভুল ধারণা জন্মে। মেকাপ করে মানুষের শরীর একদম নিখুঁত করে তোলে। ফলে বিয়ের পর যখন সে নিজের স্ত্রীর শরীর অত নিখুঁত পায় না, তখন পরিবারে অশান্তি শুরু হয়। পর্নে আসক্ত ব্যক্তি স্বাভাবিক চিন্তার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
  • নিজেকে নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগে। নিজের শরীর, নিজের মিলন নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারে না,অহেতুক হতাশায় ভোগে। সে পর্নকে বাস্তব মনে করতে থাকে, অথচ ওগুলো সব অভিনয়।
  • পর্ন তাকে বার বার বীজ অপচয় করতে বাধ্য করে। পর্ন দেখে সে উত্তেজিত হয়, আর বার বার বীজ বের করে। ফলে তার শরীর-মন সব শেষ করে ফেলে।
  • পর্ন প্রচুর সময় নিয়ে নেয়। এটা নেশার মত। আজ যা দেখেছে। কাল তা ভালো লাগে না, আরেকটু বেশি মাত্রার প্রয়োজন হয়। তারপর আরেকটু বেশি। কাংক্ষিত কন্টেন্ট পেতে সে ইন্টারনেটে বেশি সময় দিতে থাকে। তার পড়াশুনা, চাকরি সবখানের পারফর্মেন্স খারাপ হতে থাকে। হতাশা তাকে গ্রাস করে বসে।
  • তোমরা পেপারে ‘ধর্ষণ’ শব্দটা খুব দেখছো ইদানীং। পেপার পড় কে কে? জানো এটা কী? এটা হচ্ছে— বীজ দেবার জন্য যে কাজটা নিজের স্ত্রীর সাথে করার কথা, সেই কাজটা অন্য মেয়ের সাথে জোর করে করা। এটা কঠিন অপরাধ ও গুনাহের কাজ। আসলে নিজ স্ত্রী ছাড়া যেকোন নারীকে এই বীজ দেয়াটাই খারাপ কাজ, কঠিন গুনাহ। আখিরাতে এজন্য কঠিন আজাব ভোগ করতে হবে, কে জানে কতদিন! সেটা মেয়েটার ইচ্ছাতেই হোক, আর অনিচ্ছাতেই হোক। তো পর্নের নেশায় যারা আক্রান্ত, তারা এই কাজের জন্য পাগল হয়ে যায়, নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। অন্য কারো ওপর আক্রমণ চালায় নিজের চাহিদা পূরণ করার জন্য। একবার চিন্তা কর, পেপারে তোমার ছবি এসে গেছে, তুমি অপরাধটা করেছো, তোমার বাবা-মায়ের চেহারাটা কেমন হবে, তারা কত লজ্জায় পড়ে যাবে, কতটা কষ্ট পাবে। এজন্য এসো আজ আমরা শপথ করি, আমরা কোনোদিন এই জিনিস দেখব না। কৌতূহলের বশেও না, কারণ বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এটা একটা নেশা। একবার যে দেখে সে আর ছাড়তে পারে না। তার দুনিয়ায় সব স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়, আর আখিরাতে তো কতকাল আগুনে জ্বলতে হবে তার ঠিক নেই, সেই আগুন দুনিয়ার আগুনের চেয়েও ৭০ গুণ তাপ বেশি হবে। যার যারা দেখেছো, এসো তাওবা করি, আল্লাহর কাছে ফিরে আসি। আয় আল্লাহ, আমাদের মাফ করে দিন। আমরা আর কোনোদিন এই সর্বনাশা জিনিস দেখব না। আপনি আমাদেরকে রক্ষা করেন। আমীন।

.

এখন এই যে তোমরা লেখাপড়া করছো। কেন? কারণ যে এখন খেলাধুলা কম করে লেখাপড়া বেশি বেশি করবে, সে পরে বৌবাচ্চা নিয়ে সুখে থাকবে, তাইতো? একইরকম ভাবে, এখন যে এই দুই জিনিস থেকে বেঁচে থাকবে, নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবে। সে পরে মহাক্ষতি থেকে বেঁচে যাবে। আর যে খেলতামাশায় মত্ত হবে, পর্ন দেখা আর ইচ্ছা করে বীজ বের করার গুনাহে লিপ্ত হতেই থাকবে। তার পারিবারিক জীবন শেষ হবে, সেই চিন্তায় চিন্তায় সে নিজেও শেষ হয়ে যাবে। দুনিয়াই হয়ে যাবে তার দোযখ, আর মৃত্যুর পর দোযখ তো আছেই। এজন্য আজ আমরা সবাই আল্লাহর কাছে তাওবা করি, আল্লাহ আমাদেরকে রক্ষা কর এই কাজ থেকে। আমাদের তাওবা কবুল কর।