by lostmodesty | Apr 4, 2019 | অনুপম-উত্থান
লিফলেট বিতরণ করার কথা মাথাতে আসলে প্রথমেই যে ছবিটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেটা হচ্ছে, একজন, মানুষের ভীড়ে জোর করে হাতে হাতে লিফলেট গুঁজে দিচ্ছে, আর আম জনতা একবার চোখ বুলিয়ে মাটিতে ফেলে দিচ্ছে। অনেক সময় চোখ বুলানোও হয়ে ওঠেনা । লিফলেট হাতে পাবার পর সরাসরি মাটিতে স্থান পায়। আমরা এই জিনিসটা নিয়েই ভয় পাচ্ছি। টাকা খরচ করে লিফলেট বানিয়ে, কষ্ট করে আম জনতার নিকট পৌঁছানোর পর সেটার পরিণতি যেন এমন না হয়। অনেকের সাথে কথা বলে, চিন্তা করে আমরা বোঝার চেষ্টা করেছি কীভাবে লিফলেট বিতরণ করলে কম পরিশ্রমে,কম খরচে ম্যাক্সিম্যাম টার্গেটে পাবলিকের কাছে পৌঁছানো যায়। এখানে আমরা সেগুলো নিয়ে কিছুটা আলোচনা করব ইনশা আল্লাহ্। আপনারা আপনাদের মতামত জানাতে পারেন। এবং সে অনুসারে মাঠে কাজ করতে পারেন।
.
১) প্রিন্ট করাবেন কীভাবেঃ
লিফলেটের সফটকপি ডাউনলোড করে নিজে প্রিন্ট করতে পারেন। ডাউনলোড লিঙ্ক- https://tinyurl.com/LMleaflet। এখানে শুধুমাত্র ছাত্রছাত্রীদের (১৫+) ও অভিভাবকদের মধ্যে বিতরণযোগ্য লিফলেটের সফটকপি দেওয়া আছে। ১০+ বছর বয়সীদের মধ্যে বিতরণযোগ্য লিফলেটের ডিজাইন আমরা খুব শীঘ্রই নিয়ে আসতে পারব ইনশা আল্লাহ্। লিঙ্কে গেলে দেখবেন PDF, EPS দুই ধরনের ফরম্যাট আছে। দোকানে প্রিন্ট করতে নিয়ে গেলে সাধারণত EPS ফরম্যাট চায়। আপনি দুটোই নিয়ে যাবেন। ওরা যেটা চায় দিতে পারবেন। ফটোকপি অথবা প্রেস থেকে যদি অনেক কপি করাতে চান (৫০০+) তাহলে প্রেস থেকে করালে ভালো । ফটোকপির দোকানগুলো থেকেও করাতে পারেন। প্রেস এবং ফটোকপি মেশিন আছে এমন ভাইদের সহযোগিতা এখানে একান্তভাবে কাম্য। আপনারা আল্লাহর ওয়াস্তে এগিয়ে আসুন। দ্বীনের কাজে সাধ্যমতো এগিয়ে আসুন। আপনার সামান্য সহযোগিতা হয়তো অসংখ্য তরুণ যুবকের জীবন রক্ষা করবে।
২) লিফলেট কিনতে চাইলেঃ
আমাদের জন্য, অশ্লীলতার বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইনের একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল লিফলেট সহজলভ্য করা। অনেকেই ক্যাম্পেইন করতে চাচ্ছিলেন কিন্তু হাতের কাছে লিফলেট পাচ্ছিলেন না। আল্লাহ্র অশেষ রহমতে বেশ কিছু ভাই এগিয়ে এসেছেন এ সমস্যা দূর করতে। এখন থেকে ইনশা আল্লাহ নিচের পেইজগুলোতে লিফলেট কিনতে পাওয়া যাবে। সারাদেশে ইনশা আল্লাহ কুরিয়ারের মাধ্যমে লিফলেট পাওয়া যাবে। কাগজের কোয়ালিটির ওপর ভিত্তি করে লিফলেটের দাম পড়বে ১.৫ টাকা থেকে ২ টাকা পার পিস।
.
অবশ্যই পড়ে নিন এই লিখাটি- http://lostmodesty.com/alormichil/

ছাত্রছাত্রীদের (১৫+) মধ্যে বিতরণযোগ্য লিফলেটের ছবি ১

ছাত্রছাত্রীদের (১৫+) মধ্যে বিতরণযোগ্য লিফলেটের ছবি ২
.
৩) কীভাবে বিতরণ করবেনঃ
রাস্তাঘাটে দাঁড়িয়ে, সাধারণ পথচারীদের, মসজিদের বাহিরে দাঁড়িয়ে বা বাজারে সবার হাতে হাতে লিফলেট ধরিয়ে দেওয়াকে আমরা তীব্রভাবে নিরুৎসাহিত করছি। এভাবে লিফলেট দিলে বেশিরভাগ মানুষই সেটা না পড়ে ফেলে দেয়। তাহলে কীভাবে বিতরণ করবেন?
.
আপনার নিজের স্কুল বা কলেজে যান। প্রিয় স্যারের সঙ্গে কথা বলুন। তাঁকে পরিস্থিতি বোঝান। তিনি বুঝবেন ইনশা আল্লাহ্। তারপর ক্লাসরুমে গিয়ে ছোটভাইদের হাতে হাতে লিফলেট দিন। চাইলে দু’এক কথায় পর্নোগ্রাফির ভয়াবহতা বোঝান। এটা খুবই ইফেক্টিভ হবে ইনশা আল্লাহ্। আমার স্কুলে এভাবে একজন ভাই এসেছিলেন। এবং আমি তাঁকে দেখে খুব প্রভাবিত হয়েছিলাম।
.
এভাবে না পারলে, সুযোগ না থাকলে, স্কুল/কলেজের গেটে দাঁড়িয়ে দিতে পারেন। খুব বেশি তাড়াহুড়া না করে অল্প অল্প করে দিলেন। দেওয়ার সময় অনুরোধ করলেন যে যেন সে এটা পড়ে, ফেলে না দেয়। শয়ে শয়ে কপি বিতরণ করাটা আপনার উদ্দেশ্য নয়, বরং আপনার উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষজন যেন এটা পড়ে উপকৃত হয়।
.
স্কুল,কলেজ, ভার্সিটি পড়ুয়া ছোটভাইয়ের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলতে পারেন যে সে যেন তার বন্ধুদের মাঝে এগুলো বিতরণ করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিতরণ করতে চাইলে আমরা বলব সেই প্রতিষ্ঠানের অনুমতি নিতে। চাইলে কোচিং সেন্টারেও যেতে পারেন। বিকেল বেলার খেলার মাঠ আরেকটা ভালো জায়গা।
.
ভার্সিটির হলে বা হোস্টেলে থাকলে রুমে রুমে গিয়ে এক কপি করে দিতে পারেন। নিজে যেতে না পারলে সকালবেলা রুমে রুমে যিনি পত্রিকা দেন, তাঁকে ধরুন। দরকার হলে উনার মোবাইলে ফ্লেক্সি দেওয়ার দশবিশ টাকা দিন। উনি পত্রিকার সাথে সাথে সবার রুমে লিফলেটের একটা কপি পৌঁছিয়ে দিবেন।
.
দূরপাল্লার ট্রেনগুলো লিফলেট বিতরণের আরেকটি আদর্শ জায়গা। মানুষজনের করার কিছু থাকেনা। বসে বসে ঘুমায়, মোবাইল টিপে, গল্প করে। উনাদের হাতে লিফলেট ধরিয়ে দিন। দেখবেন উনারা আপনার লিফলেট পড়ে ভাজি ভাজি করে ফেলেছেন ।
.
বাজারের প্রত্যেক দোকানীকে এক কপি করে দিন। ব্যবসার ফাঁকে ফাঁকে পড়বেন। চায়ের স্টলে অলস আড্ডা দেওয়া মানুষগুলোর হাতে লিফলেট ধরিয়ে দিন। ফুসকা, ঝালমুড়ির দোকানে, ফাস্টফুড আর রেস্টুরেন্টগুলোতে, জীমে,বইয়ের দোকানগুলোতে, স্টেশনারির দোকানগুলোতে, ফটোকপি, ফ্লেক্সিলোডের দোকান, দর্জির দোকানগুলোতে বেশ কয়েককপি লিফলেট দিয়ে রাখুন। এই জায়গাগুলোতে তরুন,যুবকদের অনেক আনাগোণা। সহজেই ওদের হাতে পৌঁছে যাবে লিফলেট।
.
লিফলেট বিতরণ করার সময় অবশ্যই ছবি তুলবেন, ভিডিও করবেন, ফেসবুক লাইভে যাবেন । এর ফলে পর্নোগ্রাফির বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন আরো গতিশীল হবে ইনশা আল্লাহ। এই কাজগুলো দেখে অসংখ্য ভাই অনুপ্রাণিত হবেন আল্লাহ চাইলে। নীল এই দানবের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধে তা হবে এক বিশাল সাফল্য ইনশা আল্লাহ্।
.
এই হলো লিফলেট বিতরণ প্রসঙ্গে আমাদের টিপস। আপনারা মাঠে নামলেই বুঝতে পারবেন কীভাবে আরো ভালো মতো কাজ করা যায়। আপনাদের যে কোনো পরামর্শ হাইলি এপ্রিসিয়েটেড।

অভিভাবকদের মাঝে বিতরণযোগ্য লিফলেটের ছবি ১

অভিভাবকদের মাঝে বিতরণযোগ্য লিফলেটের ছবি ২
by lostmodesty | Apr 4, 2019 | অনুপম-উত্থান
(যেসব ভাইয়েরা পর্নোগ্রাফি-মাস্টারবেশন এর কুফল নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে চান, কিন্তু বুঝতে পারছেন না কিভাবে শুরু করবেন, কি নিয়ে কথা বলবেন, কোথায় যাবেন – এই নোট, আলোর মিছিলে নাম লিখাতে চাওয়া সেই ভাইদের জন্য। এই আলোয় কেটে যাক গুমোট অন্ধকার আর হতাশা, পুড়ে ছাই হয়ে যাক অশ্লীলতা আর আসক্তি)
.
পর্নোগ্রাফি-মাস্টারবেশনের নেশায় বুদ হওয়া এই মাতাল সমাজ শিশুনির্যাতন, ধর্ষণ, অজাচার, হত্যা, মানবপাচার, মাদক, এইডস, সমকামিতা, হতাশা, আত্মহত্যা, বিবাহবিচ্ছেদ, হত্যা… প্রতিদিনই একের পর এক উপহার (!) দিয়েই চলছে এই নির্দয় পৃথিবীতে। বিস্তারিত জানার জন্যে পড়তে পারেন ‘মুক্ত বাতাসের খোঁজে’ বইটি। কিন্তু এই ব্যাপারে সমাজ একদম মুখে তালা দিয়ে রেখেছে। কোনো কথায় বলছেনা। যেই সমাজ একটি ফুলকে বাঁচানোর জন্য একসময় অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল, পঞ্চাশ বছর ধরে সেই একই বীরত্বের গীত গেয়ে যাচ্ছে সেই সমাজ কাপুরুষের মতো নীরবে ঝরে যেতে দিচ্ছে একের পর এক ফুল বাগান। ডাবল স্ট্যান্ডার্ড ছাড়া এটা আর কী হতে পারে! আমরা এই সুশীল সমাজের মত ভণ্ড হতে চাই না। চাই না সচেতনতার অভাবে বা অজ্ঞতার কারনে হারিয়ে যাক আমাদের ভাই-বোন। তাই আমরা আহ্বান করছি সেসব সৈনিক ভাইদের যারা পর্নোগ্রাফি-মাস্টারবেশনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চান। উঠে পড়ুন। পড়াশুনা হল, লিখালিখিও হল, এখন মশাল হাতে মাঠে নামার পালা। সমাজকে বদলাতে হবে, তাদের চোখে পড়া ছানি কেটে ফেলতে হবে, চিরতরে অন্ধকার জেঁকে বসার আগেই। কিভাবে আগাবেন? একটু পরে বলছি, তার আগে জেনে নিন-
.
কি কি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেনঃ
.
‘মুক্ত বাতাসের খোজে’ বইটা আগে নিজে পড়ুন। এরপর বইয়ের আর্টিকেল এর ক্রমানুসারে আলোচনা করতে পারেন।
.
১. পর্ন কেন দেখা যাবে না? মাস্টারবেট কেন করা যাবে না? কী এমন ক্ষতি? আমি তো শুধু পর্ন দেখি কারও ক্ষতি তো করছি না? (keywords: মাদকের চেয়েও ক্ষতিকর, ধর্ষণ, খুন, অজাচার, বিবাহ-বিচ্ছেদ, পশুদের মত যৌন প্রবৃত্তি, শারীরিক ক্ষতি- যৌন ক্ষমতা লোপ, ইরেক্টাইল ডিসফাংশন ইত্যাদি)
.
২. আচ্ছা মানলাম এগুলা অনেক ক্ষতি করে, শুধু নিজের না অন্যেরও ক্ষতি করে। কিন্তু আমি নিরুপায়, আসক্ত। এ থেকে বের হতে পারছি না। কী করবো?
.
৩. অনেকদিন এগুলা থেকে দূরে ছিলাম হঠাৎ অমুক ছবি/ভিডিও/ভাবনা আমাকে বাধ্য করলো পর্ন-মাস্টারবেশনে। এখন? আমি বোধহয় এই নেশা থেকে বের হতে পারবোনা?
.
৪. আচ্ছা আমি সব ছেড়ে দিলে কি শারীরিক মানসিক ক্ষতি রিকভার করা সম্ভব? কতদিন লাগবে? কি কি খাবো? আল্লাহ কি আমাকে মাফ করবেন?
(keywords: বইয়ের ‘বৃত্তের বাইরে’ অধ্যায়টা)
.
এই প্রশ্নগুলার উত্তর নিয়ে গুছিয়ে আলোচনা করতে পারেন। যার/যাদের সাথে আলোচনা করবেন উনাদের বলতে পারেন ‘মুক্ত বাতাসের খোঁজে’ বইটা পড়ার জন্য। আপনি নিজে বই উপহার দিতে পারেন বা মোবাইলে বইয়ের পিডিএফ দিয়ে দিতে পারেন ইনশা আল্লাহ।
.
কোথায় এবং কিভাবে দাওয়াহ এর কাজ করবেন?
.
এই বিষয়ে নিচে কিছু সাজেশন দেয়া হল আপনারা মনোযোগ দিয়ে পড়বেন ইনশাআল্লাহ।
.
১) স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট তথা সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে পর্ন, হস্তমৈথুন, চটিগল্প, আইটেম সং এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে লিফলেট বিতরণ/ সেমিনার আয়োজন করা।
.
.
সেমিনারের আয়োজন– কয়েকজন বন্ধু মিলে স্কুল,কলেজে গেলেন। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ক্লাসরুমে গিয়ে ছাত্রদের পর্ন হস্তমৈথুনের ভয়াবহতার ওপর কিছু কথা বললেন। ( ফ্রি মিক্সিং যেন না হয়, সতর্ক থাকতে হবে। ছেলেরা ছেলেদের নসীহত করবেন, মেয়েরা মেয়েদের) আসক্তি থেকে বের হয়ে আসার কিছু টিপস দিয়ে দিলেন। ব্যস, এতেই হবে ইনশা আল্লাহ। ভিডিও দেখানো যেতে পারে। কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যেতে পারে। পুরষ্কার হিসেবে যদি চকোলেটও দেন তাহলেও ছাত্রছাত্রীরা আনন্দ পাবে। এগুলো করার জন্য খুব বেশি লজিস্টিক সাপোর্ট এর দরকার পড়েনা। এক্সপার্ট হবারো দরকার নেই। কিছু সাধারণ জ্ঞান থাকলেই চলে। মুক্ত বাতাসের খোঁজে বইটা পড়া থাকলে তো পোয়াবারো। আপনি তাদের মনোজগতে ছোট্ট একটা নাড়া দিয়ে আসলেন। অন্ধকার কানাগলিতে আলো হাতড়ে বেড়ানো মানুষদের পথের চিহ্ন বলে দিলেন। বাকী পথটুকু তারা নিজেরাই হেঁটে যাবে ইনশা আল্লাহ।
.
২) পর্ন, হস্তমৈথুন, চটিগল্প তথা সামগ্রিক নৈতিক অবক্ষয়ের ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির কাজে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটির সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ। ছাত্ররা কাদামাটির মতো, আপনারা চাইলে তাদেরকে যেভাবে খুশি সেভাবে গড়ে নিতে পারেন। ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক, সপ্তাহের পাঁচ/ছয়দিন তাদের, আপনাদের সামনে বসে থাকতে হয়। আপনাদের ক্লাস লেকচার শুনতে হয়। আপনারা তাদের দ্বিতীয় বাবা-মা। আপনারা কি চান এভাবে আপনাদের সন্তানেরা নষ্ট হয়ে যাক?
.
আপনারা এগিয়ে আসুন। আপনাদের সন্তানদের ভুল পথ থেকে ফিরিয়ে আনুন। ছাত্ররা আপনাদের নিকট আমানত। আমানতের খিয়ানত করবেন না। আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। ভলান্টিয়ার ভাইয়েরা আপনারা আপনাদের স্কুল কলেজের প্রিয় স্যারগুলোর কাছে যান। তাঁদেরকে মুক্ত বাতাসের খোঁজে বইটা পড়তে দিন। আমাদের সাইটের লিখাগুলো পড়তে দিন। দু’আ নিয়ে আসুন।
.
৩) অভিভাবকদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করা জরুরী। মুক্ত বাতাসের খোঁজে বই পড়াতে পারলে খুবই ভালো হয়। বেশিরভাগ অভিভাবকই এ বিষয়ে একদম সচেতন নন। ভেবে বসে থাকেন যে তাঁদের সন্তান কখনোই এই কাজে জড়াতে পারেননা। অভিভাবকদের ব্যাপকমাত্রায় সচেতন করতে হবে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। স্কুল বা কলেজগুলোর অথোরিটি মাঝে মাঝে অভিভাবকদের নিয়ে মিটিং ডাকেন। এই মিটিংগুলোতে পর্ন,হস্তমৈথুন আসক্তির ভয়াবহতা, সন্তানদের এই ফিতনাহগুলো থেকে রক্ষার উপায় নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। সম্মানিত শিক্ষকরা এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।
.
.
৪) ইমাম সাহেবদের এ ব্যাপারগুলোতে সচেতন করা জরুরী। পর্ন,হস্তমৈথুনের ভয়াবহতা সম্পর্কে তাদেরকে অবহিত করতে হবে। দুই-তিনদিন জুমআর খুতবায় এ বিষয়ে আলোচনা করার জন্য অনুরোধ করতে হবে। একান্তই সম্ভব না হলে কমপক্ষে এক জুমআ। তাঁদের কাছ থেকে লিফলেট বিতরণ সংক্রান্ত সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। খুবই ভালো হয় যদি ইমাম সাহেবদের হাতে এক কপি করে মুক্ত বাতাসের খোঁজে বই তুলে দেওয়া যায়। আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান ভাইয়েরা এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে পারেন। লস্টমডেস্টি টিমের পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের সামর্থ্য খুবই সীমিত তারপরেও আল্লাহর রহমতে এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক বই আলিমদের উপহার দেওয়া হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ।
.
৫) চিকিৎসক, মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের সচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। আমরা সাধারণ আম জনতা। আমরা এক ঘন্টা বকবক করে মানুষকে পর্ন,হস্তমৈথুনের ব্যাপারে যতোটুকু সচেতন করতে পারবো, আপনারা হয়তো পাঁচমিনিট বা আরো কম কথা বলে এর চাইতে বেশি সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারবেন। আমরা হাজার যুক্তি, রেফারেন্স দিয়ে বোঝালেও আমাদের কথা হেসে উড়িয়ে দেবার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু আপনাদের কথা গুরুত্বসহকারে নিবে। এ সমাজ, এ ভূমি আমার, আপনার সকলের। আসুন অসহায়দের পাশে এসে দাঁড়ান। ব্যস্ত সময়সূচী থেকে কিছুটা সময় বের করুন। স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিগুলোতে সেমিনার, ওয়ার্কশপ করুন। সমাজটাকে বাঁচাতে হবে ।ভাইয়েরা, আপনার নিকটস্থ চিকিৎসক বা মেডিকেল শিক্ষার্থীদের কাছে যান। তাঁদেরকে মুক্ত বাতাসের খোঁজে বইটা পড়তে দিন। আমাদের ওয়েবসাইটের লিখাগুলো পড়তে দিন। সচেতন করুন।
.
৬) বন্ধুদের মধ্যে এ ব্যাপারগুলো নিয়ে অবস্থা এবং সময় বুঝে আলোচনা করা দরকার। বই কিনে উপহার দিন। পিডিএফ পড়তে দিন। যাদেরকে পড়তে দেওয়া হচ্ছে, তারা আসলেই বইটা পড়ছে সেটি নিশ্চিত করা দরকার । প্রয়োজনে ট্রিটের লোভ দেখিয়ে পড়ানো যেতে পারে। আপনাকে নিয়ে তারা হাসি ঠাট্টা করবেই। এইটা ধরে নিয়েই কাজে নামতে হবে।
.
৭)
ফটোকপি বা কম্পিউটারের দোকানদারদের বোঝানো।
এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাদের অনেকেই পর্ন বিক্রি করে। মেমোরি কার্ডে পর্ন লোড করে দেয়। তাদের গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে সুন্দর করে এর ভয়াবহতা বোঝানো জরুরী। কথা না শুনলে প্রয়োজনে অন্য ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। প্রাসঙ্গিক- –
https://tinyurl.com/ycv96kkv ডেস্টিনি-
https://bit.ly/2MqWqLv আমি তারায় তারায় রটিয়ে দিব-
https://bit.ly/2wTkWQm .
.
৮)
.
ক. যারা ইন্টারনেট প্রোভাইডার তাদের মাধ্যমে বাসায় বাসায় লিফলেট পোঁছানো যেতে পারে। তাদের সাহায্য নিয়ে রাউটারের মাধ্যমে পর্ণ সাইটগুলো ব্লক করে নেওয়া জরুরী।
.
খ. ক্যাবল টিভির অপারেটরদেরও এই ব্যাপারে দাওয়াত দেওয়া উচিত। তাদের মাধ্যমে ভারতীয় এবং দেশীয় অশ্লীল চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করতে হবে। সমাজের নেতৃত্বস্থানীয় মুরুব্বীদের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার অনুরোধ করা হচ্ছে।
.
গ. দৈনিক পত্রিকা বিতরণ অফিসগুলোর মাধ্যমে ঘরে ঘরে পত্রিকার সাথে আমাদের লিফলেটগুলো পৌঁছানর ব্যবস্থা করুন। এটা এক ঢিলে দুই পাখির মত, অভিভাবকরাও জানবেন, তরুণরাও সচেতন হবেন।
.
৯) আপনারা যারা ফটো এডিটিং করতে পারেন তারা ‘মুক্ত বাতাসের খোঁজে’ বইয়ের লিখাগুলো দিয়ে
স্টিকার বা পোস্টার বানাতে পারেন। (অথবা আমাদের ‘চলচিত্র’ অ্যালবাম
http://lostmodesty.com/চলচিত্র/ থেকেও ছবি নিতে পারেন)।
স্কুল-কলেজ-ভার্সিটির বাথরুমে, দেয়ালে বা পাব্লিক প্লেসে, বাসে যেখানে যেখানে আজেবাজে লিখা বা ছবি আছে সেগুলার উপর লাগিয়ে দিতে পারেন।
.
কিভাবে শুরু করবেন বুঝতে পারছেন না?
এর একটাই কারন, আপনারা সহজ কাজকে কঠিন ভাবে চিন্তা করছেন। প্রথমেই ভাবছেন মাত্র কয়েকজন কিভাবে পুরো এলাকা বা জেলায় কাজ করবো ! এত এত টাকা কোথা থেকে আসবে ! ইত্যাদি। ভাই আমার, এত কঠিনভাবে কেন ভাবছেন?
.
- আপনার কেউ নাই! একা। তাহলে কিভাবে আগাবেন? পাশের বাড়ির বন্ধু বা ছোট ভাইকে দিয়েই শুরু করুন না! আপনার আন্তরিকতায় অন্তত একজন ফিরে আসতে পারলে এটাই তো আপনার সফলতা। চেষ্টা করাটাই তো আসল, বাকিটা আল্লাহর ফয়সালা।
- ২-৩ জন জোগাড় হয়েছে, নাহ এত অল্প মানুষ দিয়ে কি পুরো গ্রাম/এলাকা চষে বেড়ানো সম্ভব। ধুর বাদ দেই প্ল্যান। – এই যে হতাশ ভাই, শয়তান তো শুরুতেই আপনাকে হারায় দিচ্ছে! ২-৩ জন নিয়ে পুরো এলাকা দাপাতে কে বলেছে? একটা স্কুল/ মহল্লার ভাইদের/ মসজিদে শুরু করে দিন না দাওয়াহর কাজ। পুরো এলাকা যেতে হবে কেন? আপনি ছোট ছোট পোস্টার ছাপিয়ে পত্রিকা অফিসে দিয়ে দিন যত জনের বাসায় পত্রিকা যাবে সবার কাছে তো ম্যাসেজ পৌঁছে যাচ্ছে!
- আমার লোকবল আছে, আর্থিক সামর্থ্য আছে, বড় বড় নেতা/ জনপ্রতিনিধি/ শিক্ষক/ ইমাম/ ডাক্তারদের সাথে লিংক আছে। – ভাই আপনাকেই তো খুঁজছে বাংলাদেশ! এই সুযোগটা কাজে লাগান। পর্ন মাস্টারবেশন নিয়ে বড় আকারে সেমিনার দরকার, মুভমেন্ট দরকার, সামাজিকভাবে সচেতনতা জোরদার করা দরকার। আপনারা বসে থাকবেন না ভাই।
.
ফেসবুক বা সোশ্যাল মিডিয়া খুব কাজের জিনিস, সহজেই লোকবল খুজে পাওয়া যায়, একে অপরের সাথে কমিউনিকেট করা যায়, ম্যাসেজ পৌঁছানো যায় দূরদূরান্তে। এই প্লাটফর্মকে কাজে লাগান। আপনারা কাজ শুরু করার সময় একটা পেজ বা গ্রুপ খুলে নিন। আপনারা কি কাজ করতে চান, কবে শুরু করবেন, কোথায় করবেন- এসব আপডেট দিতে থাকুন। ছবি দিন। ভিডিও শেয়ার করুন। অনলাইনেও প্রচার করুন আপনাদের কাজ। মানুষ চিনবে, জানবে, উৎসাহ দিবে, ফান্ডও দিবে অনেক ডোনার ভাই ইনশাআল্লাহ। এই প্রচারণাই আপনাদের সাপোর্ট দিবে পরবর্তী ইভেন্ট করার।
.
একটা কথা বলা প্রয়োজন মনে করছি। নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি যে এ ধরণের কাজে বেশি প্ল্যান করলে মাঠে আর নামা হয় না। এমনো দেখা গেছে, এক দুই সপ্তাহ ধরে প্ল্যান করে করে খাতা কলমে বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছি, কিন্তু বাস্তবে একটা প্ল্যানও এক্সিকিউট করতে পারিনি। তাই আমাদের সাজেশন থাকবে বেশি প্ল্যান না করে কাজে নেমে পড়া। কাজ করতে করতে প্ল্যান করা। বেশি প্ল্যান করলে দেখবেন শেষমেষ কিছুই করা হয়ে ওঠেনি। আল্লাহ্র ওপর ভরসা করে মাঠে নামুন। আল্লাহ বারাকাহ ঢেলে দিবেন ইনশা আল্লাহ। বিশ্বাস করেন, বুঝতেই পারবেন না কীভাবে কীভাবে কতো সহজে কাজ হয়ে গেল। ভরসা রাখুন আল্লাহর ওপর। নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য অতি নিকটে।
.
প্রয়োজনীয় কিছু লিংক-