by lostmodesty | Aug 31, 2018 | ব্লগ
বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম।
অনেকে FTND (http://fightthenewdrug.org ) তে নিজেদের জীবনের ব্যক্তিগত ঘটনার কথা বলেন কীভাবে তাদের ও তাদের সঙ্গীর জীবনে পর্ন প্রভাব ফেলেছে। আমরা এসব ঘটনাবলি খুবই গুরুত্বের সাথে নিয়ে থাকি। পর্নোগ্রাফির অপকারিতা সম্পর্কে বিজ্ঞান ও গবেষনা নিয়তই কাজ করে যাচ্ছে, সেই সাথে কারো জীবনের সত্যি কাহিনী আমাদের সামনে আসলে তা জীবন্ত হয়ে তুলে ধরে পর্নোগ্রাফি বাস্তব জীবনে কী ক্ষতি করছে।
আমরা সম্প্রতি একজনের চিঠি পেয়েছি যিনি পর্ন থেকে অবাস্তব যৌনাচরণ শিখতে চেষ্টা করার কুফল ভোগ করেছেন। পর্নে যা দেখতে মজার ও আনন্দদায়ক লাগে তা বাস্তব জীবনে নীচ ও অস্বস্তিকর। আবার এটাই প্রচুর মানুষের কাছে যৌনশিক্ষার একমাত্র মাধ্যম। এরকম অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে পর্ন কীভাবে ভুল যৌনশিক্ষা দেয়, যা সংগীর সাথে সম্পর্কে খারাপ প্রভাব ফেলে যৌনজীবনের ক্ষতি করে।
……
প্রিয় এডিটর,
আমার বয়স ২৪ বছর, কেনিয়ার অধিবাসী। আমি ১৫ বছর বয়সে ম্যাগাজিনে পর্ন বিষয়ে পড়তে শুরু করেছিলাম। কারন সে সময়ে আমার তখনও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ ছিল না। আমি খুব চটপটে ও এ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় এবং নতুন কিছু শিখতে ভালবাসি। তাই আমার সামনে কোনকিছু আসলে তা না পড়ে থাকতে পারতাম না। এভাবেই পর্নোগ্রাফির সাথে ম্যাগাজিন থেকে আমার পরিচয়।
পরবর্তীতে যখন ইন্টারনেট ব্যবহারের সু্যোগ পেলাম, শুরুতেই জানতাম কি খুঁজতে হবে। তখন থেকেই পর্ন দেখা শুরু করলাম ও পর্নের মেয়েদেরকে নিজের সাথে কল্পনা করতে লাগলাম। সত্যি বলতে, পর্নের এই অভ্যাসটা আমার কাছে ভালই মনে হত কারন পর্নের মেয়েদের শুধু পর্দায় দেখতে পেতাম আর তাদেরকে কল্পনা করতে পারতাম বাস্তবে দেখা না করেই বা না শুয়েই। শুরুর দিকে মাত্রাটা বেশি না থাকলেও কিছুদিন পর আমার নিয়মিত পর্ন দেখার অভ্যাস নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে গেল।
আমি সব সময়ই বিশ্বাস করেছিলাম পর্ন দেখা এবং এর কলাকুশলীদের নিয়ে গবেষনা করা ভবিষ্যতে আমাকে সংগিনীর জন্য মস্ত ভাল প্রেমিক করে তুলবে, আরো আকর্ষনীয় করে তুলবে এবং গার্লফ্রেন্ড পেতে সাহায্য করবে। এর একটিও সত্য হয় নি যদিও। যেমন, পর্ন থেকে পাওয়া টিপস আমাকে বিছানাতে একেবারে বাজে করে ফেললো। বস্তুত আমার অবস্থা এতই বাজে হয়ে গেল যে, আমি শুধু পর্নের মাধ্যমেই উত্তেজিত হতাম, গার্লফ্রেন্ডের দ্বারা না। আমি আর কোন কিছুকে পাত্তা দিতাম না, সারাক্ষন পর্ন দেখতাম, প্রায় সবখানেই, এমনকী জনবহুল জায়গাতেও। এটা হয়ে দাঁড়াল একটা বড় সমস্যা।
আসলেই পর্ন এক কঠিন নেশা। এটা অস্বস্তিকর এবং এর ফলাফল সর্বনাশা। একবার আমার এক প্রাক্তন বান্ধবী প্রচণ্ড ভেঙ্গে পড়ে প্রশ্ন করেছিল, “তুমি কেন শুধু পর্দার ঐ নড়াচড়া করা দৃশ্যগুলোর জন্য আমাকে ধোঁকা দিচ্ছ?” সে ভীষণ কষ্ট পেয়েছিল, কিন্তু আমি ছিলাম আসক্ত। সে আমাকে এটা ছেড়ে দিতে বলার পরেও যখন পারলাম না, আমাদের সম্পর্কটা ভেঙ্গে গেল। আমি হতাশ হয়ে পড়লাম।
মজার ব্যপার হল, একটা ধারণা আছে যে, আপনি চাইলেই যেকোনো সময় পর্ন দেখা ছেড়ে দিতে পারবেন এবং এটা কোন কঠিন বিষয় নয়- কিন্তু এটা সত্যি না। আপনি যত দেখবেন, তত আরো বেশি চাইবেন। সত্যিই পর্ন সম্পর্কে আগে যা যা বিশ্বাস করতাম এর সবই মিথ্যা। পর্ন আমাকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে নি, ভাল প্রেমিক করে তোলে নি, আমার সম্পর্ককে ভাল করে টিকিয়ে রাখে নি। পর্ন থেকে আমি যা পেয়েছিলাম তা হল বিফলে যাওয়া সময়, গ্লানি এবং যৌনজীবন সম্পর্কে ভুল মন্ত্রণা। আরো খারাপ বিষয় হল, পর্ন সবখানে ছড়িয়ে থাকে। এমনকী সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও। তাই আমি এ থেকে পালাতে পারতাম না।
কেন আমি পর্ন দেখা বন্ধ করার ও এর বিরুদ্ধে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিলাম? গত মাসের শেষ দিকে আমার বান্ধবী সিদ্ধান্ত নিল আমাদের সম্পর্কের ইতি টানার। এতগুলো ব্যর্থ চেষ্টার পর আর তাকে বোঝাতে পারি নি যে আমি বদলাতে পারব। খুব কষ্ট পেয়েছিলাম যখন সে বলেছিল, “পর্ন তোমাকে কেবল একটা অপদার্থ করে ফেলবে। বিদায়।” ভীষণ হতাশ হলাম কারন সে ছিল আমার তৃতীয় বান্ধবী যে এই কথাটি বললো। এবং জানেন, আমি এর কোন পাল্টা যুক্তি দেখাতে পারি নি।
সত্যি কথা হল, পর্ন স্বাস্থ্যকর নয়, উপকারী নয়। আমি সেরে উঠতে চাই নিজের কারনে ও আমার ভবিষ্যতের সম্পর্কগুলোর কারনে।
আশা করি আমার কথাগুলো যে পর্ন দেখা বন্ধ করতে চাইছে এমন কাউকে অনুপ্রেরণা দেবে। কারণ এ থেকে ভাল কিছুই আসে না। সত্যিই, পর্ন ভালবাসাকে মেরে ফেলে। FTND কে ধন্যবাদ ভাল কাজের জন্য।
………
পর্ন যদিও সীমাহীন যৌনাচার দিয়ে ভরা এক অবাস্তব জগতের আশা দেখায়, বিজ্ঞান প্রতিনিয়তই প্রমান করে যাচ্ছে বাস্তবটা আসলে ঠিক এর বিপরীত। তাছাড়া, পর্নের কারনে বিপুল সংখ্যক পুরুষ দর্শক অপূর্ণ যৌনচাহিদার সমস্যায় ভুগছে। যার মাধ্যমে স্পষ্টতই বোঝা যায়, তারা শুধুমাত্র পর্নের প্রভাবে তাদের ইরেক্টাইল ডিসফাংশন এর জন্য বাস্তব যৌনক্রিয়ায় আর সক্রিয় থাকতে পারছে না। বিছানায় ভাল প্রেমিক হবার কথা ভুলেই যান, যেখানে পর্ন আপনাকে একেবারে যৌন নিষ্ক্রিয় দশায় নিয়ে যাচ্ছে।
পর্ন থেকে যৌনশিক্ষা গ্রহণ করা এবং এ্যাকশন মুভিতে গাড়ি নিয়ে ধাওয়া করার দৃশ্য দেখে গাড়ি চালানো শেখা একই কথা। এখানে সবই অত্যন্ত অবাস্তব, অতিরঞ্জিত এবং একেবারেই বাস্তব জীবনের কাছাকাছি না। পর্ন এক প্রকার ফাঁকি, একারনে এটি পারস্পরিক সম্পর্কের মাঝে অবাস্তব চাহিদা তৈরি করে এবং ভালবাসা ও ঘনিষ্ঠতার মাঝে বিকৃত আচরণ ঢুকিয়ে দেয়।
সমাজকে বুঝতে হবে যে, বাস্তব সংস্রবই পারে মানুষকে সত্যিকারের যৌনতৃপ্তি দিতে। আপনি যতই পর্ন দেখুন না কেন, দিন শেষে রক্তমাংসের মানুষের সাথে মেশার কামনাই করবেন। সমাজ এখন প্রযুক্তির সাথে যৌনক্রিয়া চর্চার ভয়ংকর পথে যাত্রা করছে। পর্ন দেখার অভ্যাসকে স্বাভাবিক বলে ধরে নিলে আমরা এমন একটা অবস্থায় গিয়ে পৌঁছাব যেখানে বাস্তব সম্পর্কগুলোর জায়গা পর্ন দখল করে নেবে…
চলবে ইনশা আল্লাহ্
(লস্ট মডেস্টি অনুবাদ টিম কর্তৃক অনূদিত)
রেফারেন্সঃ https://goo.gl/xJp2Uw
আগের পর্ব গুলোঃ
নীল রঙের অন্ধকার (প্রথম কিস্তি): https://goo.gl/38nyqS
নীল রঙের অন্ধকার (দ্বিতীয় কিস্তি): http://bit.ly/2hz9Pqu
নীল রঙের অন্ধকার (তৃতীয় কিস্তি): http://bit.ly/2hwkT5K
নীল রঙের অন্ধকার (চতুর্থ কিস্তি): https://goo.gl/8cUK9B
নীল রঙের অন্ধকার (পঞ্চম কিস্তি): https://goo.gl/DFL62I
নীল রঙের অন্ধকার (ষষ্ঠ কিস্তি): https://goo.gl/0ffWi6
পর্ণঃ জীবনের স্বাদ নষ্টকারী: https://goo.gl/doMrt0
আত্মোপলব্ধিঃ http://bit.ly/2ibGm4Z
আরো পড়ুনঃ
১০৮ টি নীলপদ্ম – http://bit.ly/2h6vHbM
পর্ণঃ পুরুষের যৌবনশক্তি বিনাশকারী- http://bit.ly/2h6mYX9
by lostmodesty | Aug 31, 2018 | ব্লগ
বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম।
আসসালামু আলাইকুম ভাই,
আল্লাহ্ আপনাদের কাজে বারাকাহ দিক । আমার নাম আবু সাব্বির (ছদ্মনাম)। আমি ১৯ বছরের এক তরুণ। থাকি শান্তিনগরে (ছদ্ম ঠিকানা)। পর্ন এবং মাস্টারবেশন আসক্তি আমার জীবনকে বিষিয়ে দিয়েছে।
সপ্তাহ দুয়েক আগে আমি আপনাদের ফেসবুক পেইজ (www.facebook.com/lostmodesty ) খুঁজে পাই । তখনই বেশ কিছু লিখা পড়ে ফেলি। অনেকেই পর্নআসক্তির বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রামের কথা শেয়ার করেছেন। আমার জন্য তাঁদের লড়াইয়ের কাহিনীগুলো ছিল খুবই অনুপ্রেরণাদায়ক। অনেক দিন ধরেই আমি চেষ্টা করছি এই আসক্তি কাটিয়ে ওঠার,কিন্তু কেন জানি পারছিনা। আমি হতাশ,ক্লান্ত, নিঃস্ব ,রিক্ত । দয়া করে আমাকে একটু সাহায্য করুন। আমার কাহিনী অন্যদের চেয়ে একটু আলাদা। সময় নিয়ে পড়বেন আশা করি।
শুরু করি তাহলে? তখন আমার বয়স ছিল পাঁচ বছর। একটা ফ্ল্যাটে আরো দুইটা পরিবারের সঙ্গে আমরা ভাড়া থাকতাম। ঐ ফ্ল্যাটে তিনটা রুম থাকলেও টয়লেট ছিল কেবল একটা। আমাদের রুমের বামের রুমে যেই পরিবার থাকতো,তাঁদের ক্লাস সিক্স পড়ুয়া এক ছেলে ছিল। আমরা একসঙ্গে খেলাধুলা করতাম,মাঝে মাঝে তার কাছে পড়া বুঝতে যেতাম। সে আমার বড় ভাইয়ের মতো ছিল।
হুট করে সে আমার সঙ্গে অদ্ভুত আচরণ করা শুরু করলো । আমার সামনেই পোশাক পাল্টাতো,আমার শরীরের এখানে সেখানে বাজেভাবে স্পর্শ করতো। আমি তার এরকম অদ্ভুত আচরণের কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পেতাম না। সে আমার স্পর্শকাতর জায়গাগুলোতে হাত বুলাতো এবং মাস্টারবেট (এটা আমি অনেক পরে বুঝেছিলাম) করতো । সে বলতো,‘দেখ তুই আমার আদরের ছোট ভাই। এইসব কথা কাউকে বলবি না’।
কয়েকদিনের ভেতরেই সে আমাকে শিখিয়ে দিল কীভাবে মাস্টারবেট করতে হয়। যখন আমাদের বাবা মা কেউই বাসায় থাকতো না, তখন সে আমার এখানে সেখানে হাত বুলিয়ে মাস্টারবেট করতো। আমি ভাবতাম এটা বোধহয় মজার একটা খেলা, বাবা মা বাসায় না থাকলে এটা খেলতে হয়।
আমি সেই সময় ছিলাম একেবারেই বাচ্চা। তেমন কিছুই বুঝতাম না। দেখতাম সে মাস্টারবেট করার কিছুক্ষণ পরে স্নানঘরে যেয়ে গোসল করে নিচ্ছে। একবছর ধরে এমনটা চললো। তারপর ওরা বাসা বদলে চলে গেল অন্য জায়গায়।
কিন্তু এর মধ্যে যা ক্ষতি হবার হয়ে গিয়েছে। তাকে ছাড়াই আমি মাস্টারবেট করা শিখে গিয়েছি ততোদিনে। মাসে অন্তত দুইবার মাস্টারবেট করতাম। কোন ধারনাই ছিলনা আমি কি করছি,কিন্তু এটা আমাকে আনন্দ দিত প্রচুর।
দশ বছর বয়সে ঘটলো এক অদ্ভুত ঘটনা। ততোদিনে আমি পুরোদস্তর মাস্টারবেশনে আসক্ত একজন। একদিন মাস্টারবেট করার পর দেখি আমার লজ্জাস্থান থেকে কি জানি বের হয়ে আসছে। আমি ভয় পেয়ে গেলাম প্রচন্ড। সেই সময় মুখে ব্রণ উঠতে শুরু করলো। শরীর দুর্বল হয়ে গেল। পড়শোনায় মন দিতে সংগ্রাম করা লাগতো তখন।
সেই সময় আমাদের দেশে মাল্টিমিডিয়া ফোন জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে কেবল। আমার কয়েকজন বন্ধুর mp4 প্লেয়ার ছিল। তাদের সঙ্গে আমি পর্ন দেখা শুরু করলাম। টিফিন পিরিয়ডে,ক্লাসের আগে, ক্লাসের পরে এমনকি ক্লাসে বসে বসেও আমি পর্ন দেখতাম। বন্ধুদের সঙ্গে মেয়ে নিয়ে সবসময় রসালো আলোচনা করতাম। বয়স খুব বেশি না হলেও ততোদিনে আমি পরিণত হয়েছি দাঁতালো এক বুনো শুয়োরে।
নিজের মাল্টিমিডিয়া ফোন হাতে পেলাম ১৪ বছর বয়সে। ইন্টারনেট তখন খুব একটা সহজলভ্য ছিলনা তারপরেও যতবেশি সম্ভব পর্ন ডাওনলোড দিতাম। স্কুলের রেজাল্ট খুব খারাপ হতে থাকলো। মানসিক সমস্যা তো আগে থেকে ছিলই , বিভিন্ন দৈহিক সমস্যাও দেখা দিতে লাগলো। স্কুল বদলে অন্য স্কুলে গেলাম যেন পড়াশোনা আবার নতুন উদ্যোমে শুরু করতে পারি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হলোনা। পড়াশোনা করব কি নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতেই পারলাম না! চুপচাপ থাকতাম সব সময়,কারো সঙ্গে তেমন একটা মিশতাম না। খেলাধুলার ধারে কাছেও যেতামনা , সত্যি বলতে কি এনার্জি পেতাম না খেলাধুলা করার। সবসময় হয়রান লাগতো। স্কুল পালাতাম। সপ্তাহে দুইবারের মতো পর্ন দেখতাম আর মাস্টারবেট করতাম। দুই বছর গেল এভাবেই।
১৬ বছর বয়সে যা হয়েছিল তা ভাবলে আমি আজো শিউরে উঠি। বাহিরের দুনিয়া সম্পর্কে আমার বাস্তব জ্ঞান তখন ছিল একেবারেই শুন্যের কোঠায়; ইন্টারনেট ঘেঁটে আবছা আবছা একটা ধারনা ছিল এই আরকি। বেঁচে থাকা অসহ্য মনে হতো আমার কাছে। কোনকিছুই ঠিকমতো করতে পারতাম না। বাবামার সঙ্গে রাগারাগি করতাম। আমার না ছিল কোন ভাইবোন না ছিল কোন বন্ধু বান্ধব। আমার এই করুন অবস্থার জন্য কাউকে দায়ী করতে চাইতাম আমি। কিন্তু কাকে দায়ী করব?
শেষমেশ কাউকে না পেয়ে দায়ী করলাম আল্লাহ্কে! সব দোষ আল্লাহ্র! তিনি যদি আমাকে ঐ ছেলের সঙ্গে না মেশাতেন ছোটবেলায় তাহলে আমি পর্ন,মাস্টারবেশন কি জিনিস জানতামই না আর আমার জীবনটা এরকমও হতো না । আমি নাস্তিক ছিলাম না, কিন্তু আল্লাহ্কে দোষ দিতাম।
তারপর ভাবলাম যে,বখাটে ছেলেপেলেদের সঙ্গে মেলামেশা করি। তারা হয়তো আমার বন্ধু হবে আর আমি এই নরকতুল্য জীবন থেকে মুক্তি পেয়ে ‘অস্থির’ একটা জীবন পাব।বখাটে ছেলেদের সঙ্গে মেশা শুরু করলাম, রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিড়ি ফোকা শুরু করলাম। গাঁজাটাই বা বাদ যাবে কেন ! গাঁজার কল্কিতেও দম দেয়া শুরু করলাম। মাঝে মধ্যে কড়া কিছু ড্রাগসও নিতাম। রাস্তায় রাস্তায় রংবাজি করে বেড়াতাম সারাদিন।
ভাবতাম এতদিনে বোধহয় আমার স্বপ্নের জীবনটা পেয়ে গেছি আমি, কিন্তু আমার পর্নআসক্তি গেলই না বরং আরো বাড়লো। ড্রাগস নিতাম তো শরীরে এনার্জি যেন টগবগ করে ফুটতো, প্রচুর পরিমাণ মাস্টারবেট করতাম। হাস্যকর একটা ব্যাপার ঘটলো এইসময়…
প্রেমে পড়লাম আমি!
পর্ন দেখতাম আর ও’কে নিয়ে ফ্যাণ্টাসীতে ভুগতাম। কিন্তু আমি জানতাম কখনোই তাকে নিজের করে পাবো না আমি । কত পাগলামিই যে করেছি আমি তার জন্য! হাসি পায় এখন এসব মনে হলে। হাত কেটে রক্ত দিয়ে তার নাম লিখেছি,মারামারিতে জড়িয়েছি আরো কত কি! সে অনেক কথা!
একসময় মেয়েটার বিয়ে হয়ে গেল । আমি ভেঙ্গে পড়লাম আরো বেশী ।বখাটে ছেলেপেলেদের সঙ্গে মেশাবন্ধ করলাম। বাসায় থাকতাম সবসময়। মাঝে মাঝে শুধু সিগারেট কিনতে বাহিরে যেতাম। পর্ন দেখার মাত্রা বেড়ে গেল আরো।
আলহামদুলিল্লাহ্! এই সময় আমি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইসলাম সম্পর্কে অল্পবিস্তর জানাশোনা শুরি করি। আমি জানলাম আমি যেগুলো করছি সেগুলো করা মারাত্মক ভুল। যে ভুল আমি করেছি তার মাশুল আমাকে সারাজীবন গুনতে হবে। অন্যান্য ধর্ম নিয়েও ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করেছিলাম কিছুদিন। কিন্তু শেষমেশ বুঝলাম যা আমি খুঁজে বেড়াচ্ছি সেটা ইসলাম, অন্য কিছু না।
গাঁজা খাওয়াতো আগেই ছেড়েছি এবার সিগারেট খাওয়াও ছেড়ে দিলাম। বাসায় নামাজ পড়া শুরু করলাম। কিন্তু পর্ন আর মাস্টারবেশন আসক্তি ছাড়তে পারলামনা কিছুতেই।
পুরোনো কাসুন্দি তো অনেক ঘাঁটাহল। এবার বর্তমান অবস্থার কথা বলি…
আমি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত বাসায় পড়ার চেষ্টা করি। পড়াশোনা করিনা, বাবা মার সঙ্গে থাকি। ভাইবোন নেই,নেই কোন বন্ধবান্ধব।একাকীত্বে ভুগি,আত্মবিশ্বাস তলানিতে। মানুষজনের সঙ্গে মিশতে পারি না। এমনকি বাসায় আত্মীয়স্বজন আসলে আমি পালিয়ে পালিয়ে বেড়াই। আমি মানসিক ভাবে অসুস্থ। পাগল বলতে পারেন একপ্রকার। নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলি প্রায়ই, মানুষজন আড়চোখে তাকায়। কিছু মনে থাকে না। তীব্র মাথা ব্যাথা হয়,ব্যাথায় মাথা যেন ছিড়ে যায়,মনে হয় মাথা কেটে ফেলে দেই। আমার বয়স যদিও ১৯ বছর আমাকে দেখে মানুষ ভাবে আমার বয়স বোধহয় ত্রিশের কোঠায়। চুল পড়ে যাচ্ছে আর আমার যে ছোট ছোট কিছু দাঁড়ি আছে জানি না কি কারণে সেটা লাল হয়ে যাচ্ছে।
আমি খুব বেশী খাওয়া দাওয়া করিনা, কিন্তু আমি অনেক মোটা। ব্যায়াম ট্যায়াম যে করবো তাও হয়না, সবসময় এতো ক্লান্ত থাকি…
আমি জানি না কী করব। আমি এত অল্প বয়সে মাস্টারবেশনের সাথে পরিচিত হয়েছিলাম যে আমার শরীর নিজে নিজেই রিঅ্যাক্ট করে। অর্থাৎ প্রায় প্রতি রাতেই মাস্টারবেট করি। এমনকি ট্রাউজার বেল্ট দিয়ে বেঁধে রাখলেও নিজেকে থামাতে পারি না। নিজের অজান্তেই পাপ করে ফেলি। ব্যাপারটা অদ্ভুত যে মাস্টারবেশনের পর পর্নোগ্রাফির দিকে ঝুঁকে পড়ি। অপরাধবোধ হয়, মনে হয় যে খোদা আমাকে ক্ষমা করবেন না, তারপর পর্ন দেখি। আমার একটি পিসি ও ফোন আছে। আমার কোন ডিভাইসেই পর্ন নেই, হতাশ লাগলে ওসবের সাইটে যাই। মাঝে মাঝে ওয়েব ব্রাউজ করার সময় নারীর ছবি দেখলে উত্তেজিত হয়ে যাই। ক্লিক না করে থাকতে পারি না।আমার আত্মীয়স্বজন বেড়াতে এসে তাদের সন্তানদের সাফল্য নিয়ে গর্ব করেন। আমি আরো হতাশ হয়ে যাই,পুনরায় ফিরে যাই পাপের রাজ্যে। আমার মা-বাবা আমাকে বকাঝকা করলে আমি হতাশ হয়ে পাপ করে ফেলি। সবভাবেই আমি ডুবে যাচ্ছি এক গভীর অন্ধকারে।
একটা হাদিস আছে যেখানে বলা হয়েছে, হাশরের ময়দানে একদল মানুষ আল্লাহ্র সামনে পাহাড়সমান পুণ্য নিয়ে দাঁড়াবে, কিন্তু আল্লাহ্ সেই পুণ্যগুলোকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিবেন, কারণ এই মানুষগুলো একা থাকা অবস্থায় সব ধরণের সীমা অতিক্রম করেছিল ও আল্লাহ্কে অমান্য করেছিল। [রেফারেন্স লাগবে]
আমার নবী (সাঃ) আমাকে নিয়ে হাদিসে বলেছেন। আমি যখন একা থাকি, আমিও ওরকম কাজ করি।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ। দয়া করে আমাকে সাহায্য করুন।
আরো পড়ুনঃ
নীল রঙের অন্ধকার (প্রথম কিস্তি): https://goo.gl/38nyqS
নীল রঙের অন্ধকার (দ্বিতীয় কিস্তি): http://bit.ly/2hz9Pqu
নীল রঙের অন্ধকার (তৃতীয় কিস্তি): http://bit.ly/2hwkT5K
নীল রঙের অন্ধকার (চতুর্থ কিস্তি): https://goo.gl/8cUK9B
নীল রঙের অন্ধকার (পঞ্চম কিস্তি): https://goo.gl/DFL62I
নীল রঙের অন্ধকার (ষষ্ঠ কিস্তি): https://goo.gl/0ffWi6
নীল রঙের অন্ধকার (সপ্তম কিস্তি):https://goo.gl/s366A1
পর্ন জীবনের স্বাদ নষ্টকারী: https://goo.gl/doMrt0
আত্মোপলব্ধিঃ http://bit.ly/2ibGm4Z
by lostmodesty | Aug 31, 2018 | ব্লগ
বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম ।
# “আমার নাম আমান্ডা । আমার মনে হচ্ছে পর্নোগ্রাফি নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা অন্যানাদের জানানো উচিত যাতে তারা সাবধান হতে পারে। আমার সঙ্গী ছিল মারাত্মক রকমের পর্নআসক্ত। শুরু থেকেই সে আমাকে বুঝাতে শুরু করে যে ,পর্ন আসলে স্বাভাবিক একটা ব্যাপার আর সবাই কম বেশি এটা দেখে। সে তার বন্ধুদের কথাও বলতো যে, তারাও পর্ন দেখে থাকে। কষ্টকর হলেও আমি শুরু থেকে তার এই আচরণের সাথে মানিয়ে নিতে চাইতাম কিন্তু দিন দিন এটা অসহ্যকর পর্যায়ে চলে যাচ্ছিল। দেড় বছর ধরে নিজের মনের সাথে ক্রমাগত যুদ্ধ করতে করতে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। আমার স্বামী তখন দিনে প্রায় ৩ বার পর্ন ভিডিও দেখতো। তার চিন্তাভাবনা সব কিছু জুড়েই ছিল পর্ন। এছাড়া শারীরিকভাবে সে আমাকে নির্যাতন করতে শুরু করে। সে আমাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে পর্নমুভির মতো করে ধর্ষণ করতো।আমার মাথায় গুলি ভরা পিস্তল তাক করে মেরে ফেলার হুমকি দিত। আমি বুঝতে পারলাম, সে পর্ন এর কল্পনার জগত আর বাস্তব জগত মিশিয়ে ফেলেছে। সেখানে যা দেখতো, আমার সাথে একই আচরণ করার চেষ্টা করতো। [১]
# আমার বয়স একান্ন বছর, আমি এক প্রতিবন্ধী কন্যার মা। পর্ন আমার পরিবারকে ধ্বংস করে ছেড়েছে ।
আমি ষোল বছরের বিবাহিত জীবন কাটিয়েছিলাম এমন একজন মানুষের সাথে, যে জানতই না যে একজন নারীর সাথে কীভাবে চলতে হয়। সে সবসময় হতাশাগ্রস্ত ছিল। তার সমস্যাটা কী ছিল সে ব্যাপারে আমার কোন ধারণাই ছিল না । অফিস থেকে ফিরে বিছানার এক পাশে এক ল্যাপটপ নিয়ে শুয়ে থাকত। যখন আমি তার সাথে কথা বলতে যেতাম
তখন সে ল্যাপটপটা দ্রুত নামিয়ে রাখত আর বলত যে সে বাথরুমে যাবে। এরপর যখন আমি চলে যেতাম তখন সে ফিরে আসত আর আগের মতোই কাজ করত। এক রবিবার সকালে আমার এক ছেলে হাঁটার সময় তাকে ল্যাপটপে পর্ন ডাউনলোড করতে দেখতে পেল। আমার ছেলেই আমাকে জানাতে দেরি করলনা।
.
অবশেষে আমি সমস্যাটা জানলাম। এর এক বছরের মধ্যেই আমরা তালাক নিই। ছয় বছর হল আমাদের বিচ্ছিন্ন হওয়ার। আমার চিন্তা আমাদের প্রতিবন্ধী মেয়েটাকে নিয়ে, যার দেখাশোনার দিকে ওর কোন নজরই নেই।
তালাকের এক বছর পরে আমি আরেকজন মানুষকে পাই যাকে দেখে সত্যিই ভাল মনে হয়, কিন্তু তারও ঠিক একই
সমস্যা আছে। যখন বাসায় আসে তখন থেকে কাজ করতে বাইরে যাওয়ার সময় পর্যন্ত সে তার ঘরে থাকে। সে সপ্তাহে
পাঁচদিন এমন করে । তার কোন বন্ধু নেই; সে হতাশায় ভুগছে; তার আছে পর্নের ১০০টি ডিভিডি আর ২০০টি ম্যাগাজিন ।
এমনকি সে এক নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্কেও লিপ্ত । সে আমাদের মাঝে একটা ভাল সম্পর্কের সব সুযোগকে নষ্ট
করেছে। সে কোন নারীর সাথেই সামাজিক হতে পারে না এবং নারীদেরকে শুধু পণ্য হিসেবেই দেখে। প্রকাশ্যেই স্বীকার
করে যে সে কখনো সুখী হবে না কিন্তু তারপরও সে পর্নের প্রতি আসক্তির এতটাই গভীরে গেছে যে সেখান থেকে সে ফিরে
আসতে পারে না। আমার ভয় হল, যদি তার মা-বাবা(যারা খুব অসুস্থ) মারা যায়, তাহলে সে আরো গভীরভাবে
পর্নের প্রতি আসক্ত হবে।
.
আমার বোন একটি তের বছর বয়সী ছেলেকে দত্তক নিয়েছিল।ছয় বছর বয়সে তাকে এবং তার ভাইবোনদের উদ্ধার করে ডিএসএস। এই ছেলেমেয়েগুলোর মা-বাবা পর্ন দেখত। আর পর্ন দেখার সময় তারা বাচ্চাদেরকে শোয়ার ঘরের মেঝেতে থাকতে বাধ্য করত। টেলিভিশনে যেসব যৌনকর্ম দেখানো হত সেগুলোর অনুকরণ করতে এই দুই, পাঁচ ও ছয় বছর বয়সী বাচ্চাদেরকে
তারা বাধ্য করত। বাচ্চাগুলো এমন করতে অস্বীকার করলে তাদেরকে পেটানো হত। সেখানে থাকত
বাচ্চাদের এক চাচা- সেও পর্ন দেখত। তার বিকৃত লালসার শিকার হয় শিকার হয় পাঁচ বছর বয়সী মেয়েটি।
আমি চাই সরকার পর্নমুভি নিষিদ্ধ ঘোষনা করুক । ইন্টারনেট জুড়ে রয়েছে পর্নমুভির বিশাল ভান্ডার যা প্রতিদিন হাজারো জীবন ধ্বংস করছে , যেমনটা আমার ক্ষেত্রে হয়েছে । আমি এখন আরেকটি সম্পর্কে
জড়াতে ভয় পাই। আমি যে আরো আঘাত সহ্য করতে পারব তা আর বিশ্বাস হয় না। [২]
.
#……… আমি এখনও হাইস্কুলে পড়ি, আর আমি গত চার বছর ধরে পর্নের প্রতি আসক্ত। এর শুরুটা ছিল কৌতুহল,
প্রথমে আমি শুধু জানতে চাইছিলাম যে এটা কী, তারপর কিভাবে কিভাবে যেন আমি এটাতে আসক্ত হয়ে পড়লাম । আমার অবস্থা এখন এতটাই খারাপ যে এখন আমি খারাপ চিন্তা ছাড়া কোন মেয়ের দিকে তাকাতেও পারি না।
স্কুলের বাইরে বা শপিংমলে হাঁটার সময় বন্ধুদের সাথে থাকলেও আমি শঙ্কিত থাকি।
.
আমি পর্ন দেখতে থাকলাম, আর এক বছর পর আমি মানুষকে অশ্লীল মেসেজ পাঠাতে শুরু করলাম, যা আমাকে যৌনকর্মের
প্রতি আগ্রহী করে তুলল, এর কয়েক মাস পরে আমি আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধুকে হারাই, কারণ আমি তার প্রতি কিছু ভুল
আচরণ করেছিলাম।আর এখন আমি কোন মেয়ের সাথে দেখা করতেও ভয় পাই।আমার কৌতুহলের সাড়ে চার বছর পরে অবশেষে আমি একজনের কাছ থেকে সাহায্য পেলাম।আমি পর্ন দেখা শুরু করেছিলাম এবং সাহায্য পেয়ে আমি তা বাদ দিয়েছি। আর আমি এ নিয়ে গর্বিত। [৩]
# …… আমার নাম সেলিনা । আমি ইউ.এস.এ তে থাকি । আমি মনে করি পর্নমুভি পারিবারিক বন্ধন দুর্বল করে ফেলে , আত্মীয়তার সম্পর্কের বাঁধন আলগা করে ফেলে , মাঝে মাঝে ছিড়েই ফেলে । একদিন আমি হুট করেই আবিষ্কার করে বসলাম আমার এক আংকেল (উনি আমাকে ছোটবেলা থেকেই কোলেপিঠে করে মানুষ করেছেন ) ভয়ংকর রকমের পর্ন আসক্ত । কয়েক বছর আগে উনার ছোট বাচ্চাকে দেখাশোনা করার জন্য আমি কিছুদিন উনার বাসায় ছিলাম । এই সময় একদিন আমি একটা ক্লজেটে প্রচুর পরিমাণ পর্নমুভির সিডি পেয়ে গেলাম । এই সিডি গুলো ছিল এমন কতগুলো ক্যাটাগরির যা ভাবলে আমার গা ঘিন ঘিন করে ওঠে – ঘৃণায় । ইনসেস্ট, রেপ , টীনিস … ছি ,ছি । কি জঘন্য । নিমিষেই আংকেলের ওপর থেকে আমার সব বিশ্বাস , শ্রদ্ধা উবে গেল কর্পূরের মতো । সেই সাথে ছোটবেলায় তার সাথে কাটানো চমৎকার সময়গুলো, স্মৃতি গুলো আমাকে এক বিরাট প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিল । তার সঙ্গে কুস্তি খেলা , তার কোলে বসে টিভি দেখা এগুলো কি শুধু নিখাঁদ স্নেহ, ভালোবাসার প্রকাশ ছিল নাকি অন্য কিছু ……? যেহেতু এর সঠিক উত্তর আমার কাছে নাই তাই আমি তাকে আর বিশ্বাস করতে পারি না । আমার মেয়ে তার আশেপাশে থাকলে আমি অস্বস্তি বোধ করি ।
.
পর্ন আসক্তদের বলতে চাই – তোমরা কি খুশি হবে যদি তোমাদের কোন নিকটাত্মীয় দেখে ফেলে তুমি ইনসেস্ট পর্ন দেখছো ? কেমন লাগবে তোমার তখন ? [৪]
.
(ভাই, একবার ভাবুনতো আপনার আদরের ছেলে-মেয়ে ,ভাগ্নে- ভাগ্নী , ভাতিজা- ভাতিজি , ছোট বোন বা অন্য কোণ নিকটাত্মীয় যদি কোণ দিন কোণ ভাবে আপনার পর্ন আসক্তির কথা জেনে যায় তারা কতটা কষ্ট পাবে । আপনাকে তারা হয়তো হিরোর আসনে বসিয়েছিল, আপনাকে পদে পদে অনুসরণ করতো ,আপনার মতো হতে চাইতো , আপনার কাছে তারা নিরাপত্তা খুঁজে পেত । আপনার অন্ধকার জগতের হদিস পাবার পরেও তাদের কাছে আপনি কি আর সেই আগের আপনি থাকবেন ? তাদের কাছে মুখ দেখাবেন কি করে ? )
চলবে ইনশা আল্লাহ্ …।
রেফারেন্সঃ
[১] https://goo.gl/KysUPR
[২] https://fightthenewdrug.org/
[৩] https://fightthenewdrug.org/
[৪] https://goo.gl/vsAvg8
by lostmodesty | Aug 31, 2018 | ব্লগ
বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম ।
বিশোর্ধ্ব এক পর্ন-আসক্ত তরুণের জীবনের একটি দিন
আমি পর্নে আসক্ত।
আমি সবসময় এরকম না, কিন্তু অনেক দিন থাকে যেদিন ঘুম থেকে উঠে কোন কিছুই করতে ইচ্ছা
হয় না। বরং ঠিক করি, দিনটা যাবে পর্ন দেখে, হস্তমৈথুন করে, খাওয়া-দাওয়া করে এবং ঘুমিয়ে। হয়তো আমি এটা আগে থেকেই ঠিক করে রাখি না, তাও কীভাবে যেন হয়ে যায়। সত্যি কথা বলতে, মোটামুটি ১০ম বারের বেলায় যথাসম্ভব চেষ্টা করি একদমই না ভাবতে, যে আমি বেশ ভাল পরিমাণ সময়ই সম্পূর্ণ অচেতনতায় কাটাচ্ছি। পোষায় না যদিও। শুধু কয়েক মুহুর্তের যৌন-আনন্দ। এমনকি কখনো তাও না, শুধু শ্বাস-প্রশ্বাস একটু দ্রুত হওয়া। (পর্নের) চেহারাগুলোর কথা চিন্তা করি, নিজেকে ওদের জায়গায় কল্পনা করি। আমার পছন্দের পর্নের টাইপ হল যেগুলোতে গ্রুপ-সেক্স থাকে। কিছু বন্ধু-বান্ধব একত্র হওয়া শুধুমাত্র যৌনতার খাতিরে। তেমন কোন ব্যাপার না। তাদের লজ্জা করে না, নাই অপরাধবোধ, নাই খেদ। শুধু মেনে নেওয়া। শুধু সেক্স। শুধু নগ্ন হওয়া, একে অপরের দিকে মুচকি হাসা। ভাল।
আমার ভাল লাগে।
প্রায়ই চিন্তা করি, আমি ওরকম করতে পারতাম কি না- নিজের কাছে নিজের যৌনতার স্বীকৃতি পাওয়া এবং যতটা চাই ততটা মুক্ত আর উদার হওয়া।
আমি সবসময় বুঝতে পারি কোনটা মেকি, আসল না। আমি ঐ ভিডিওগুলো একদমই সহ্য করতে পারি না, যেগুলো দেখেই বুঝা যায় মানুষগুলো অভিনয় করছে, অথবা যা-ই করুক, বাধ্য হয়ে করছে। মাঝেমাঝে আমি হয়তো ওটাও দেখবো এবং হস্তমৈথুনও করব। কোন সীমা নেই, শুধু হস্তমৈথুন করতে চাই। নিজেকে অচেতনতায় ফেলে দিয়ে অনুভূতিহীন হতে চাই। ভাবা শুরু করি, কতটা সেক্স আমি মিস করছি এবং আমি সত্যিকারের রিলেশনশিপকে কতটা ভয় পাই। এমনকি যে সব “রিলেশনশিপে” আমি ছিলাম, সবগুলোই পর্ন দ্বারা এত বেশি প্রভাবিত হয়ে গিয়েছিল যে একটা স্ক্রিনের সামনে বসে থাকার সাথে ওগুলোর আর কোন পার্থক্য ছিল না। কোন ভালবাসা বা সম্মান ছিল না। খালি উত্তেজনা আর জটিলতা।
এখন রাত ৯টা বাজে, মনে হয় সকাল ৯টায় শুরু করেছিলাম, আজকে ক্লাসেও যাইনি, বাসার বাইরেও যাইনি (একবার বাদে। ম্যাকডোনাল্ড থেকে খাবার আনতে গিয়েছিলাম, কারণ ম্যাকডোনাল্ড আর পর্ন কেন জানি একসাথে ভালই যায়)। সারাদিনের মধ্যে আমার খুব বাজে সময় যায় যখন চিন্তা করি আমার জীবনে কখনো পরিবর্তন হবে না এবং আমি সবসময়ই আমার ভীতি ও সমস্যাগুলোকে মোকাবেলা করতে ভয় পাবো। তার চেয়ে বরং কম্পিউটারে বা সেল-ফোনে পর্ন দেখতে থাকি, অথবা মাথার মধ্যে কল্পনা করতে থাকি ওগুলো। এতে ভাল কিছু হয় না এবং ফলাফলটাও আসলে পোষায় না। আমি বেশ ক্লান্ত আর আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি। মাঝেমাঝে কষ্ট হয়। গতকাল থেকে গোসল করিনি। সম্প্রতি আমার একটা “রিলেশনশিপ” ব্রেক আপ হয়ে গেছে, আমি এখনো তা নিয়ে বিষণ্ণ। আমি পর্ন ছেড়ে দিতে পারছি না কারণ আমার মনে হচ্ছে এটা তাকে (এক্স-গার্লফ্রেন্ড) আমার সাথে কোনভাবে যুক্ত রাখছে। জগাখিচুড়ি টাইপ বিকৃত মানসিকতা আর কি!
ব্যাপার হল, আমি বেশ স্বাভাবিক একটা মানুষ, স্নাতক শ্রেণীর ছাত্র। আমি চমৎকার বৈজ্ঞানিক জিনিস-পত্র পড়াশোনা করি এবং ক্লাস নিই। কিন্তু তাও, আমার ভাল লাগে না এগুলোর কোনটিই। যখন এই মানসিকতায় প্রবেশ করি, কোন কিছুরই পরোয়া করি না তখন। কোন কিছু চিন্তা করতে চাই না, সব ছুঁড়ে ফেলে দিতে ইচ্ছা করে। মনে হতে থাকে সবকিছুই আমার অধিকারসূত্রে পাওয়া। কোন কিছুর জন্যই আমি কৃতজ্ঞ না। লজ্জা, অপরাধবোধ আর আশাহীনতার সবচেয়ে গভীর গর্তে পড়ে আছি আমি। আত্মসম্মান জানালা দিয়ে পালায়, শুধু চিন্তা করি কতটা ঘৃণা করি নিজের জীবনকে এবং কতটা চাই মারা যেতে। পর্নে আসক্তির মাত্র দশ বছরের মাথায় জিনিসগুলো বিবর্তিত হয়ে পরোক্ষভাবে আত্মঘাতী চিন্তায় পরিণত হয়েছে।
মজার ব্যাপার হল, হয়তো আগামীকাল সকালে ঘুম থেকে উঠে সব ঠিক হয়ে যাবে এবং আমি আরো একবার নিজেকে বুঝাতে সক্ষম হব যে পর্ন-আসক্তিকে চিরতরে দূর করে ফেলব। পৃথিবী আমার হাতের মুঠোয় থাকবে, আমি চমৎকার সব কাজ করব। কিন্তু যে মুহূর্তে মনে হবে ব্যাপারগুলো আমার মন মত হচ্ছে না, আবার আমি যৌনতার সেই অন্ধকার গর্তে পড়ে যাব। যৌনতা খারাপ না। এটা স্বাভাবিক এবং সুন্দর। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, পর্ন আমার জন্য এটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। নারীর প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গীকে নষ্ট করেছে পর্ন, যেটাকে কি না আমি ভালবাসি ও কদর করি বলে দাবী করি। পর্ন হয়তো সবার জন্য এরকম না, কিন্তু আমাকে এটা ধ্বংস করে ফেলছে। আমাকে ধসিয়ে দেয় প্রতিটিবার। তাহলে কেন আমি বারবার এখানে আসি? কারণ এটা পরিচিত, এবং আমি নিরাশ হয়ে এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছাই যে তখন আর কোন কিছুর পরোয়া করি না। আমি এর আদ্যোপান্ত জানি, জানি কীভাবে এতে ঢুকতে হয় এবং কীভাবে এটা থেকে বের হতে হয়।
এই সময়টায় আমার সামনের যৌনদ্দীপক ছবি এবং “যৌন তৃপ্তি” ছাড়া অন্য আর কিছু থাকে না। অনেকবার চেষ্টা করেছি এটা দূর করার। খুব বেশি হলে কয়েক মাস যাওয়ার পর এই অভ্যাস মাথা-চাড়া দিয়ে উঠে আমাকে বুঝায় যে আমি সর্বোচ্চ এই পর্যন্তই আসতে পারব এবং এটাই আমার যৌনতা আর পুরুষত্বকে সংজ্ঞায়িত করে। আমি ভবিষ্যতে নিজেকে ঠিক করার চেষ্টা করব, কিন্তু এখন আমি বিষণ্ণ ও ভীত যে সারা জীবন এভাবেই চলতে থাকবে।
নিজের উপর ক্ষুব্ধ আমি, ক্ষুব্ধ নিজের অতীতের উপর, শৈশব আর সংস্কৃতির উপর, যা কিছু আমাকে নারী ও যৌনতার মাঝের সম্পর্ক শিখিয়েছে। আমি তাদেরকে দুষতে চাই, যারা আমাকে শিখিয়েছে নিজের অনুভূতি আর উদ্বেগকে চেপে রেখে সবকিছু ঠিক আছে ভান করতে।
আমি ঠিক নেই।
আমি একলা, আমি ভীত।
মনে হচ্ছে যা-ই করছি, আমাকে জোর করে করানো হচ্ছে এবং আমি যা চাই, তা থেকে আমাকে আটকে রাখা হচ্ছে। আমি কি চাই, তাও জানি না। কাউন্সেলিং ও গ্রুপ-থেরাপি নিচ্ছি। দেখা যাক কি হয়। এতদিনে সামান্য উন্নতি হলেও নিজের উপর খুব বেশি নিয়ন্ত্রণ আনতে পারিনি। যখন পা পিছলে যায়, এখানে এসে পড়ি, মনের একদম অস্পষ্ট একটা জায়গায়, যেখানে কোন কিছুরই মানে নেই, যে জায়গাটা আমার জীবনের সব ভালকে ঢেকে দেয়। আমি খুব ক্লান্ত হয়ে পড়ি। ক্লান্ত লাগে, অনেক ক্লান্ত… এবং আসক্তি চলতেই থাকে।
আমি একজন পর্ন-অ্যাডিক্ট।
—————————————————————-
দুর্ভাগ্যবশত উপরের এই ব্যক্তিগত কাহিনীটি মানুষ যতটা মনে করে তার চেয়েও কমন। এখন অসংখ্য তরুণ পর্ন দেখার খারাপ ফলগুলো উপলব্ধি করছে এবং মুক্ত হতে চাইছে। কিন্তু পর্ন অত্যন্ত আসক্তিকর প্রকৃতির হওয়ায় তারা নিজেদেরকে বিষণ্ণতা, (পর্নের উপর) নির্ভরশীলতা, এবং স্ব-চিকিৎসার এক চক্রে আটক অবস্থায় আবিষ্কার করছে। রিলেশনশিপ এবং আত্মমর্যাদাবোধ ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে, আসক্তির শেকলে আটকা পড়ে।
“আপনি” কী করতে পারেন
পর্ন খুবই আকর্ষণীয় আর উত্তেজনাময় মনে হতে পারে, কিন্তু আসলে এটা যা করে তা হল, দর্শককে আসক্ত করা এবং তার সম্পর্কগুলোর ক্ষতি করা। আর্টিকেলটা শেয়ার করে পর্ন দেখার ক্ষতি এবং ফলাফল বিষয়ক এই আসল কাহিনীর প্রতি আলোকপাত করতে পারেন।
(মূল লিখাটি- www.fightthenewdrug.com সাইট থেকে সংগৃহীত)
(লস্ট মডেস্টি অনুবাদ টিম কর্তৃক অনূদিত)
পড়ুন প্রথম চার কিস্তি –
প্রথম কিস্তি
দ্বিতীয় কিস্তি
তৃতীয় কিস্তি
চতুর্থ কিস্তি
by lostmodesty | Aug 31, 2018 | ব্লগ
আমি পর্ন দেখা শুরু করি আট বছর বয়স থেকে। তখন আমি স্কুলে পড়তাম। বন্ধুরাই আসলে আমাকে প্রথম এটা সম্পর্কে বলে। আমি ঐ দিনই তা দেখি। এভাবেই আমার আসক্তি শুরু হয়। ১২ বছর পরে আমি যখন কলেজে ভর্তি হই , তখনও আমি পুরোদমে পর্ন দেখা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। আসলে পর্ন থেকে দূরে সরে যাবার কোন ইচ্ছেই আমার ছিলনা। আমি নিজেও বুঝতে পারতাম যে এটা ঠিক হচ্ছে না কিন্তু কেন যেন এটা বাদ দিতে পারতাম না! এই আসক্তির ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কেও আমার তেমন কোন ধারণা ছিলনা। কতই না বোকা ছিলাম আমি!!!
.
সমস্যার শুরু হয় আমার বিয়ের পর থেকে। আমার মাথায় গেঁথে ছিল পর্ন ভিডিওগুলোর শিক্ষা। সত্যি কথা বলতে, যৌনতা সম্পর্কে আমি সবকিছুই জেনেছিলাম পর্ন থেকে । আমার স্ত্রী জানতো যে আমি পর্নমুভিতে আসক্ত। কিন্তু এ ব্যাপারে সে কখনো কোন কিছু বলতোনা। আসলে তারও এটা নিয়ে পরিষ্কার ধারণা ছিল না। সে ভাবতো আমার অন্য কিছু স্বাভাবিক চলছে আর তার প্রতিই বিশ্বস্ত থাকছি , তাই এটা নিয়ে তার চিন্তা না করলেও চলবে। আমি নিজেতো আসক্ত ছিলামই, পাশাপাশি তাকেও পর্ন দেখানো শুরু করি। আমরা চাইতাম পর্নমুভির মতো করে অন্তরঙ্গ হতে। আসলে এটা যে বাস্তবতা বর্জিত একটা জগৎ তা মাথাতেই আসতো না।
প্রথম প্রথম সে এটা করতো আমাকে খুশি করতে গিয়ে। কিন্তু পরে সে নিজেও আসক্ত হয়ে পড়ে। পর্নমুভি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটা অংশ হয়ে পড়ে।
.
সে আমাকে প্রায়ই জিজ্ঞাসা করতো কোন দৃশ্যটা আমার বেশি ভালো লাগে, তারপর সে পর্দার পর্ন অভিনেত্রীদের অনুকরণের চেষ্টা করতো। তার হাঁটা-চলাফেরা, সাজসজ্জা সব কিছুই হয়ে যাচ্ছিল পর্ন অভিনেত্রীদের মতো। আমি প্রথম দিকে খুশিই হতাম এই ভেবে যে, আমার স্ত্রী তো আমাকে খুশি করতেই এরকম করছে।
.
কিন্তু ঘটনা অন্য দিকে মোড় নিতে থাকে!
একদিন আমার স্ত্রী ‘গ্রুপ-সেক্স’ এর ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করল। এমনকি সে সমকামিতার প্রতিও আগ্রহী হয়ে ওঠে।আমি তাকে বোঝালাম যে সে ভুল পথে যাচ্ছে, বাস্তবতা আর কল্পনা গুলিয়ে ফেলেছে কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে!! যা সর্বনাশ হবার তা ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে!
বুঝতে পারছিলাম, আমরা ক্রমাগত ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
আমাদের মধ্যেকার সম্পর্ক দিন দিন খারাপ হচ্ছিল, ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকতো। এর মাঝে আমি শারীরিক অসুস্থতার অন্য চাকুরী হারালাম।চিকিৎসার জন্য পানির মতো টাকা খরচ হচ্ছিল। আমার প্রতি আমার স্ত্রীর ব্যবহার আমূল বদলে গেল। আমাকে যেন সে মানুষই মনে করতোনা।
সার্জারির ধকল আর তার এই ব্যবহারে আমি তখন টালমাটাল। হায়! আমার জীবনের সবই বুঝি শেষ।
কিন্তু এত কিছুর পরেও সে পর্ন আসক্তি কমাতে পারে নি, বরং আমাকেও নানা ভাবে জোরাজোরি করতো। কিন্তু সত্যি কথা বলতে আমার তখন স্বাভাবিক নড়াচড়া করতেই কষ্ট হতো,পর্ন অভিনেতাদের মতো অন্তরঙ্গ হওয়া তো দূরের কথা!
আরেকটা জিনিস লক্ষ্য করতে শুরু করলাম। আমার স্ত্রী তার অফিস শেষ হবার প্রায় ৫-৬ ঘণ্টা পর বাসায় আসতে শুরু করেছে। আমি তেমন একটা গুরুত্ব দিলাম না। কারণ তার মাঝে অনেক খারাপ কিছু থাকলেও আমার সাথে প্রতারণা করবে এই চিন্তা ঘুণাক্ষরেও মাথাতে আনতাম না। এতোটুকু বিশ্বাস অন্তত আমার ছিল।
কিন্তু আমাকে সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করে কয়েকদিন পরে সে নিজেই আমাকে আমার এক বন্ধুর কথা বললো।সে স্বীকার করলো যে তার সাথে সে এক,ধরনের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে এবং আমার চেয়ে তাকেই বেশি আকর্ষণীয় মনে হয়। এরপর একদিন ব্যাগ গুছিয়ে সে আমার সেই বন্ধুর কাছে চলে গেল।
আমার মাথায় সত্যিকার অর্থে আকাশ ভেঙ্গে পড়লো! হৃদয়টা দুমড়ে মুচড়ে গেল!
আমি আমার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক ভাবে চেষ্টা করলাম। কিন্তু কিছুতেই কাজ হল না। শেষ পর্যন্ত আমাদের ‘ডিভোর্স’ হয়ে গেল। একটা সুন্দর সাজানো সংসার শেষ হয়ে গেল।
ডিভোর্সের কয়েক মাস পরে বিভিন্ন দিক চিন্তা করে আমি বুঝতে পারলাম যে এই সব কিছুর মূলে রয়েছে পর্নোগ্রাফি।
আমার স্ত্রী তো শুরুতেই এরকম ছিল না। পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হওয়ার পর থেকেই তার এই পরিবর্তন শুরু। আমিই তাকে পর্ন দেখানো শুরু করেছিলাম। আর এর প্রায়শ্চিত্ত করলাম তাকে হারিয়ে ফেলে।
স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কের মাঝে নানা দিক থাকে। দায়িত্ববোধ, সহানুভূতিশীলতা, ভালবাসা সবকিছুই থাকে। অথচ আমরা এটা শুধু যৌনতার মাঝেই আটকে রেখেছিলাম। তার ফলাফল তো আমরা নিজেরাই ভোগ করলাম । আমি কোন দিন ভাবতে পারিনি সে আমাকে ছেড়ে অন্য কারও কাছে চলে যাবে।তাকেই’বা দোষ দেই কীভাবে?
আমার শারীরিক অসুস্থতাকে সে অক্ষমতা মনে করে নিজেকে বঞ্চিত ভাবতো। যার ফলাফল গিয়ে দাঁড়ায় ডিভোর্সে।”
====
আমাদের সমাজে এমন অগণিত দম্পতি রয়েছেন যারা একসঙ্গে মিলে পর্ন দেখেন।এর পেছনে অনেক গুলো কারণ থাকতে পারে। শয়তানের কুমন্ত্রণা রয়েছেই, সেই সঙ্গে একটু বাক্সের বাহিরে যেয়ে অন্তরঙ্গতাকে উপভোগ করতে চাওয়া। এটা ভেবে তারা ভুল করেন যে দুজনে একসঙ্গে পর্ন দেখলে বিছানায় প্রেমের তুফান বয়ে যাবে, ভালোবাসা জমে ক্ষীর হয়ে যাবে। অথচ বাস্তবতা পুরোটাই বিপরীত। স্বামী স্ত্রী মিলে একসঙ্গে পর্ন দেখতে বসার মুহূর্তেই তারা নিজ হাতে লিখে ফেলেন তাদের প্রেমের এপিটাফ। ১০৮টি নীলপদ্ম সিরিজে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এখানে সে আলোচনা পুনরায় টেনে আনা পাঠকদের শুধু বিরক্তিই উৎপাদন করবে। পাঠকদের নিকট হাতজোড় করে অনুরোধ করছি পড়ে আসুন ১০৮ নীলপদ্ম সিরিজের সবকয়টি পর্ব।
১০৮টি নীলপদ্ম (প্রথম পর্ব)-https://goo.gl/4oSpTV
১০৮টি নীলপদ্ম (দ্বিতীয় পর্ব)- https://goo.gl/98xQZV
১০৮টি নীলপদ্ম (শেষ পর্ব) http://bit.ly/2rsdkEv
মূল লিখার রেফারেন্সঃ
https://fightthenewdrug.org/asking-wife-to-watch-porn-with-me-ruined-our-marriage/
(লস্ট মডেস্টি অনুবাদ টিম কর্তৃক অনূদিত)