by lostmodesty | Sep 7, 2018 | ব্লগ
বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম ।
আমি তারায় তারায় রটিয়ে দিব …………
বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম ।
জানিস দোস্ত গতকাল না কঠিন একটা পাপ করে ফেলেছি । গতকাল রুমে কেউ ছিল না , দরজাটা বন্ধ করে , অনলাইনে যেয়ে ………
ভাই থামেন , আর কথা বাড়াইয়েন না । আপনার যে পাপ কাজের কথা আল্লাহ(সুবঃ) ছাড়া আর কোন কাক পক্ষীও টের পায়নি ,আপনার যে পাপ আল্লাহ (সুবঃ) গোপন করে রেখেছিলেন মানুষের কাছ থেকে, সেটা আপনি নিজে সকলের সামনে প্রকাশ করে দিয়ে , নিজের কি সর্বনাশ করছেন জানলে মাথার চুল একটা একটা করে ছিড়ে চান্দু হয়ে যেতেন তারপরেও আক্ষেপ ফুরাতো না ।
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন – আমার সকল উম্মত মাফ পাবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই ধৃষ্টতা যে, কোন ব্যক্তি রাতে অপরাধ করল যা আল্লাহ্ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে ভোর হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এমন এমন কর্ম করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত অতিবাহিত করল যে, আল্লাহ্ তার কর্ম গোপন রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহ্’র পর্দা খুলে ফেলল। [সহীহ বুখারি]
আরেকটা বর্ণনায়[১] এসেছে – আল্লাহ (সুবঃ) হাশরের ময়দানে ফেরেশতাদের বলবেন যাও আমার অমুক অমুক বান্দাকে ডেকে নিয়ে এসো । ফেরেশতাগন বান্দাদেরকে নিয়ে এসে আল্লাহ (সুবঃ) এর সামনে দাঁড় করিয়ে দিবেন । আল্লাহ (সুবঃ) বান্দাদেরকে বলবেন ,“ হে আমার বান্দা! আমার কাছে এসো । বান্দা আল্লাহ’র (সুবঃ) কাছে এসে দাঁড়াবে আল্লাহ (সুবঃ) বান্দাকে আরো কাছে ডাকবেন । বান্দা আল্লাহ’র (সুবঃ) আরো কাছে যেয়ে দাঁড়াবে । এভাবে বান্দা আল্লাহ’র (সুবঃ) এতো কাছে চলে যাবে যে সে নুর দ্বারা আচ্ছাদিত হয়ে যাবে । আল্লাহ্ (সুবঃ) এবং তার মাঝে শুধু একটা পর্দা থাকবে । কোন ফেরেশতা তাকে আর দেখতেও পাবে না , শুনতেও পাবে না আল্লাহ্ (সুবঃ) এবং বান্দার কথোপকথন ।
শুধু আল্লাহ্ (সুবঃ) আর তাঁর বান্দা ।
আল্লাহ্ (সুবঃ) তাঁর বান্দাকে বলবেন , “ইয়া আব্দি , দেখ তোমার আমলনামা ,তুমি নিজেই দেখ পৃথিবীতে কি করে এসেছো তুমি” ।
বান্দা তার আমলনামায় চোখ বুলাবে – শুধু পাপ আর পাপ , রাশি রাশি পাপ ।
আল্লাহ্ (সুবঃ) বলবেন ,“ ইয়া আব্দি ,তুমি কি জানতে না তুমি গোপনে যে কাজ কর আমি সেটাও দেখতে পাই ? তুমি কি জানতে না একদিন তোমাকে আমার সামনে দাঁড়াতে হবে ? তুমি কি জানতে না একদিন আমি তোমার সব কাজের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করব ?
বান্দা উত্তর দিবে , “ইয়া রব্ব! আমি জানতাম , জানতাম ……… আমি জানতাম” ।
আল্লাহ্ (সুবঃ) বলবেন,“ তাহলে কেন তুমি এই কাজ গুলো করেছিলে ? কেন” ?
বান্দা উত্তর দিবে , “ইয়া রব্ব! আপানর সামনে এই পাপের বোঝা নিয়ে দাঁড়িয়ে আমার বিচার করার চেয়ে আমাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা আপনার জন্য অনেক সহজ”।
আল্লাহ্ (সুবঃ) বলবেন,“ পাতা উল্টাও , পরের পৃষ্ঠায় যাও”।
বান্দা পরের পাতায় যেয়ে দেখবে পুরোটাই আগের চেয়েও জঘন্য গুনাহ দ্বারা পরিপূর্ণ । এভাবে সে পুরো আমলনামার পাতা উল্টিয়ে ফেলবে । প্রত্যেকটা পাতাতেই আগের পাতার চেয়ে আরো বেশী , আরো জঘন্য গুনাহ দেখতে পাবে সে । বান্দা প্রচন্ড মন খারাপ করে ফেলবে । প্রচন্ড হতাশ হয়ে সে ভাববে – আমাকে আল্লাহ্ (সুবঃ) নিশ্চয়ই এখনো জাহান্নামের আগুনের গর্তে ফেলে দিবেন । আমি তো ভালো আমলও করেছিলাম ,কিন্তু সেগুলো আমার কাজে আসলো কই ? আমার পাপই আমাকে ধ্বংস করে ছাড়লো!
আল্লাহ্ (সুবঃ) বান্দাকে বলবেন , “ ইয়া আব্দি! তুমি কেন তোমার পাপকাজ গুলো গোপন করে রেখেছিলে দুনিয়ার জীবনে”?
বান্দ জবাব দেবে , “ ইয়া রব্ব! আমি আমার পাপগুলো নিয়ে লজ্জিত ছিলাম’।
আল্লাহ্ (সুবঃ) বলবেন ,“ তুমি কি দেখনি পৃথিবীতে আমি তোমার পাপগুল মানুষের নিকট থেকে গোপন করে রেখেছিলাম । এটা ছিল তোমার প্রতি আমার রহমাহ । আজকেও আমি তোমার পাপগুলো মানুষের নিকট থেকে গোপন করে রাখবো” ।
[ অন্য একটা বর্ণনায় এসেছে – আল্লাহ্ (সুবঃ) বলবেন , “দুনিয়াতে তুমি তোমার মুসলিম ভাইয়ের দোষ গোপন করে রাখতে, তাই আজকে আমিও তোমার দোষ গোপন করে রাখব” ।]
আল্লাহ্ (সুবঃ) বান্দাকে বলবেন , “এবার আমলনামার পাতা উল্টাও” ।
আমলনামা খুলতেই বান্দার চোখ কপালে উঠে যাবে । পুরো আমলনামা জুড়েই শুধু ভালো কাজ । পাপকাজ গুলোর টিকিরও খোঁজ নেই ।
ফেরেশতারাও জানবে না যে আল্লাহ্ (সুবঃ) বান্দার সমস্ত পাপ আমলনামা থেকে মুছে ফেলে ভালো কাজ দিয়ে পূর্ণ করে দিয়েছেন ।
অতঃপর বান্দাকে মাফ করে দেওয়া হবে । [সহীহ বুখারি]
ভাই , পর্নমুভি দেখা বা মাস্টারবেট করা ছাড়তে না পারলেও চেষ্টা করুন এগুলো সবার নিকট থেকে গোপন করে রাখতে , আল্লাহ্ (সুবঃ) ছাড়া পাপের কোন সাক্ষী না রাখতে । আল্লাহ্’র (সুবঃ) দয়া হলে তিনি হয়তো আপনার এই গোপন পাপ গুলো দুনিয়াতেও গোপন রাখবেন এবং হাশরের ময়দানেও গোপন রেখে আপনাকে ক্ষমা করে দিবেন । অযথা সবাইকে বলে বেড়িয়ে কেন ক্ষমা পাবার এই সুযোগটা হারাবেন ?
বন্ধুদের সঙ্গে বসে পর্ন দেখে , মেয়েদের ফিগার বিশ্লেষণ করে বা কোন কারণ ছাড়াই [২] স্রেফ মজা করার জন্য বন্ধুদের সঙ্গে কে কত পর্ন দেখে , কার কত জিবি কালেকশান , কে কতবার মাস্টারবেট করে এগুলো নিয়ে আলোচনা করে নিজেই নিজের পায়ে কুড়াল মারবেন না, ভাই । একদিন আফসোস করতে হবে এই সব “ফান” করার জন্য । কিন্তু তখন কিছুই করার থাকবেনা ।
কিছুই করার থাকবেনা ……
পড়ে দেখতে পারেন – ডেস্টিনি – https://bit.ly/2MqWqLv
রেফারেন্সঃ
[১] https://www.youtube.com/watch?v=W58xj93ljPM
[২] পর্ন মুভি/ মাস্টারবেশন আসক্তি ছাড়ার জন্য কোন দ্বীনি ভাই , বন্ধু বা কাছের কোন মানুষের সাহায্য নেওয়া খুব জরুরী । একা একা আসক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার চেয়ে জোট বেঁধে লড়াই করা অনেক অনেক গুন ভালো । তারমানে এই নয় যে , আপনি যদু কদু মধু সবাইকে বলে বেড়াবেন আপনার পর্ন আসক্তি/ মাস্টারবেশন আসক্তির কথা , আর সবার কাছ থেকে সিমপ্যাথি পাবার চেষ্টা করবেন ।
by lostmodesty | Sep 1, 2018 | ব্লগ
রুমে কেউ নেই,দরজা বন্ধ। সামনে ল্যাপটপ ও ইন্টারনেটের অবাধ জগত। যেখানে ইচ্ছা সেখানে সার্ফিং করার সুযোগ। কেউ তো আর দেখছে না! শয়তানের ধোঁকা দেয়ার সুবর্ণ সুযোগ। আর মানবিক দুর্বলতা ও ঈমানি দুর্বলতার কারণে সেই ধোঁকায় পরার সমূহ সম্ভাবনা। বন্ধুর কাছ থেকে পেনড্রাইভ ও পোর্টেবল হার্ডডিস্ক ভর্তি করে আনা হারাম কন্টেন্টে ল্যাপটপ পূর্ণ। লাখ লাখ হারাম সাইট তো আছেই। হারামে প্রবেশ করতে একটি ক্লিকই যথেষ্ট।
বেনামাজিদের কথা বাদই দেয়া যাক, যারা নামাজ পরেন তারা অন্য গুনাহ থেকে বিরত থাকতে পারলেও শয়তানের এই আহবানকে মাঝে মধ্যে উপেক্ষা করতে পারেন না। কেননা হারাম জিনিসকে শুধুমাত্র হারাম জানলেই তা থেকে বাঁচা যায় না বরং ওই হারামকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করা দরকার। নিজেকে বুঝানো দরকার “কেউ না দেখলেও আল্লাহ্ তো দেখছেন”। আর মহান আল্লাহ্র সাহায্য থাকা তো অবশ্যই দরকার। শয়তানের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের এই বিজনেস মুসলিমদের মহান আল্লাহ্র হুকুম থেকে গাফেল করার জন্যই। এমন কাউকে পাওয়া যাবে না যে ইন্টারনেট ইউজ করে কিন্তু জীবনে কখনই এই হারাম জিনিসের প্রতি দৃষ্টি দেয়নি। কিন্তু ১/২/৩ বার গুনাহ হয়েছে বলে একে অভ্যাসে পরিণত করা মহান আল্লাহ্র হুকুমের প্রতি অবজ্ঞার শামিল।
ভুল হয়েছে, ক্ষমা চাইতে হবে, বারবার ক্ষমা চাইতে হবে আর এই হারাম থেকে বেঁচে থাকার জন্য মহান আল্লাহ্র কাছে সাহায্য চাইতে হবে।
যার চোখ নেই সেই একমাত্র জানে চোখের কদর কতোটুকু। এতো বড় নিয়ামাত চোখের শুকরিয়া কি আমরা হারাম দিকে দৃষ্টি দেয়ার মাধ্যমে আদায় করবো? ওয়াল্লাহি!
“তারা কখনও কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে কিংবা কোন মন্দ কাজে জড়িত হয়ে নিজের উপর জুলুম করে ফেললে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করবেন? তারা নিজের কৃতকর্মের জন্য হঠকারিতা প্রদর্শন করে না এবং জেনে-শুনে তাই করতে থাকে না।” (আল-ইমরানঃ১৩৫)
“আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে, এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।” (আন-নিসাঃ১৮)
এই জঘন্য গুনাহে নিমজ্জিত হওয়ার আগে আমাদের একটিবার ওইসব শহীদদের কথা মাথায় রাখা উচিত যাদের শাহাদাতের কারণে আজকে দ্বীন ইসলাম আপনার আমার পর্যন্ত এসেছে। আমরা তো সবাই শহিদ হতে চাই না। এবং শহিদ হওয়া সবার জন্য সম্ভবও নয়। মহান আল্লাহ্ যাকে অনুগ্রহ করেন একমাত্র সেই এই মহান নিয়ামাত লাভ করেন। আমাদের দরকার একটু নফসের কুরবানি। নফসের ধোঁকা থেকে নিজেকে হিফাজত করা।
খুব কি কঠিন কাজ???? সেইসব শহিদদের তুলনায় আমাদের নফসের কুরবানি কি বেশি হয়ে গেলো???? কখনই নয়।
নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত সালাত গুরুত্বসহকারে আদায় করা এবং মহান আল্লাহ্র সাহায্য ছাড়া বর্তমানের সবচেয়ে জঘন্য এই গুনাহ থেকে কেউ বেঁচে থাকতে পারবে না। খুশুর সহিত ৫ ওয়াক্ত সালাত জামাতে আদায় এবং মহান আল্লাহ্র কাছে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার দু’য়া করলে অবশ্যই মহান আল্লাহ্ সাহায্য করবেন।
মহান আল্লাহ্ বলেন,
“আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর।” (সূরা আল-আনকাবুতঃ৪৫)
ফেসবুকের নিউজ ফিড ও নেট সার্ফিং এর সময় গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার কিছু টিপসঃ
বর্তমান ফিতনার যুগে চোখের গুনাহের সবচেয়ে উর্বর জায়গা হলো অনলাইন। এই দুনিয়ার প্রতিটি কাজের হিসাব দিতে হবে হাশরের ময়দানে। এমনকি ব্রাউজার হিস্টোরি,চ্যাট হিস্টোরি, প্রতিটি লাইক/কমেন্ট এর হিসাব দিতে হবে। কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে গুনাহ করতে চাইলে তাকে ঠেকানোর কেউ নেই। আমাদের মাথায় রাখা দরকার “browsing history” ডিলিট করতে পারলেও আমরা কিরামান কাতিবিন(দুই কাঁধের ভালো-মন্দ লিখার ফিরিশতাদ্বয়) এর লিখা ডিলিট করতে পারবোনা। একাগ্রচিত্তে তাওবা ছাড়া এই গুনাহ মাফ হবে না। যারা অনিচ্ছাকৃতচোখের গুনাহ থেকে বাঁচতে চান
তাদের জন্য কিছু টিপসঃ
১) অনলাইনের অযাচিত অ্যাড দূর করার জন্য addons হিসেবে Adblock ইউজ করতে পারেন। Firefox, chrome উভয় ব্রাউজারের জন্যই পাবেন। এতে ওয়েব পেজ দ্রুত লোড হবে। ব্যান্ডউইডও কম খরচ হবে। আজেবাজে অ্যাডও দেখতে হবে না।
https://addons.mozilla.org/en-US/firefox/addon/adblock-plus/
https://chrome.google.com/webstore/detail/adblock-plus/cfhdojbkjhnklbpkdaibdccddilifddb
২) ফেসবুকের ডান পাশে আসা বিভিন্ন মডেলদের ফলো করার আইডি, বিভিন্ন অশ্লীলপেজ এর অ্যাড ইত্যাদি দূর করার জন্য facebook purity ইউজ করতে পারেন। Firefox, chrome উভয় ব্রাউজারের জন্যই পাবেন।
https://addons.mozilla.org/en-US/firefox/addon/fb-purity-cleans-up-facebook/
https://chrome.google.com/webstore/detail/fb-purity-clean-up-facebo/ncdlagniojmheiklojdcpdaeepochckl?hl=en
৩) নিউজ ফিডে উল্টাপাল্টা ছবি শেয়ার দেয়া বন্ধুদের নিউজ ফিডে অফ করে দিতে পারেন। আইডির উপর কার্সর রাখলে following লিখাকে unfollow করে দেন। এতে ওই আইডি আপানার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকবে কিন্তু নিউজ ফিডে শো করবে না। এতে চোখের গুনাহও হলো না বন্ধুও রাগ করলো না। মাঝখানে আপনি ফিতনা থেকে বেঁচে গেলেন। সেও দ্বীনের দাওয়াত থেকে বঞ্চিত হলো না।
৪) ইউটিউবে এখন প্রচুর ইসলামিক চ্যানেল রয়েছে। ওই চ্যানেলগুলোকে সাবস্ক্রাইব করে রাখলে ইউটিউবে নিজের গুগুল অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগইন করে রাখলে শুধু ওই চ্যানেলগুলোর ভিডিওগুলোর অ্যাডই আসবে। এতে চোখকে অযাচিত জিনিস দেখা থেকে বিরত রাখতে পারবেন।
কুরআন ও হাদিস থেকে কিছু রিমাইন্ডারঃ
“মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।”
(সূরা নূর : ৩০)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, দৃষ্টি শয়তানের বিষাক্ত তীরসমূহের মধ্যে একটি বিষাক্ত তীর। যে ব্যাক্তি আমার ভয়ে কু-দৃষ্টি ত্যাগ করে আমি তাকে এমন একটি ঈমানী নুর দান করি, যার স্বাদ সে তার অন্তরে অনুভব করে। (তাবরানী)
হযরত হাসান (রা.) থেকে বণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে পুরুষ দৃষ্টিপাত করে এবং যে নারী দৃষ্টিপাত করার সুযোগ দেয় উভয়ই আল্লাহর নিকট অভিশপ্ত। (মিশকাত)
হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ ফরমান, কিয়ামতের দিন সমস্ত চোখ ক্রন্দনরত অবস্থায় থাকবে। কিন্তু ঐ চোখ ক্রন্দনরত অবস্থায় থাকবে না, যে চোখ দুনিয়াতে নিষিদ্ধ বস্তু দেখা থেকে বিরত রয়েছে। (আত-তারগীব ওয়াত তারহীব।)
মহান আল্লাহ্ আমাদেরকে মাফ করুন ও শয়তানের ধোঁকা থেকে হিফাজত করুন। ঈমান আমলের যথাযথ হিফাজত করে দুনিয়া থেকে আখিরাতে যাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
by lostmodesty | Sep 1, 2018 | ব্লগ
আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার মাধ্যমে জান্নাতে যাওয়া এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া। আর তা যদি করতে হয় তাহলে জেনে নেয়া ভাল যে জান্নাতে যাওয়ার পথ ফুল বিছানো পথ নয়। সে পথে চলতে গেলে আমাদের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে হবে। সহিহ হাদিসে এসেছে যে জাহান্নামকে ঘিরে রাখা হয়েছে কামনা বাসনা দ্বারা। অর্থাৎ মানুষের যা করতে ভাল লাগে তা দিয়ে জাহান্নামকে ঘিরে রাখা হয়েছে। আর জান্নাতকে ঘিরে রাখা হয়েছে দুঃখ-কষ্ট ও ধৈর্য দ্বারা।
গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার অনেক উপায় রয়েছে তার মধ্যে এখানে বর্তমানে বাস্তবতার ভিত্তিতে ১০টি সহজ উপায় নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।
১.গুনাহের সম্ভব্য রাস্তা বন্ধ করাঃ গুনাহ যাতে না হয় সে জন্য গুনাহের উপায় গুলো বন্ধ করে ফেলতে হবে। গুনাহর সামনে যখন একজন মানুষ দাঁড়ায় তখন গুনাহ থেকে নিজেকে ফিরিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। এর চেয়ে সহজ হচ্ছে সেই গুনাহের যাতে কাছে না যেতে হয় সেই ব্যবস্থা করা। বিশেষ করে কোন কিছুর প্রতি যদি কারও আকর্ষণ থাকে তাহলে সেটা যদি সামনে এসে যায় তাহলে তা পাশ কাটিয়ে যাওয়া কঠিন। এর চেয়ে এর মুখোমুখি যাতে না হতে হয় সে ব্যবস্থা করা ভাল। সোজা কথায় খাল কেটে যেন আমরা কুমির না আনি। কুরআনে আল্লাহ বলেছেন “মুমিনদেরকে বল তারা যেন দৃষ্টি অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে।” এখানে আল্লাহ তাআলা প্রথমে দৃষ্টি অবনত রাখতে বলেছেন। তার কারন হচ্ছে দৃষ্টি অবনত রাখতে পারলে লজ্জাস্থানের হেফাজত অনেক সহজ হয়ে যায়।
বাস্তব একটি কেস নিয়ে আলোচনা করি। ইন্টারনেট বর্তমানে অনেক ফিতনার রাস্তা খুলে দিয়েছে। কিন্তু ইন্টারনেটবিহীন জীবন আবার অবাস্তব সাজেশন। তাহলে কি করতে পারি? যেটা করতে পারি সেটা হচ্ছে।
– যদি খুব দরকার না হয় তাহলে লো স্পিড নেট ব্যবহার করা।
– বিভিন্ন অ্যাপ্স আছে যা অশ্লীল ছবি/বিজ্ঞাপন ফিল্টার করে তা ব্যবহার করা।
– একা একা রুমে বসে নেট ব্রাউজ না করা।
২. দৈনন্দিন রুটিন ঠিক করাঃ আমদের ডেইলি রুটিন সম্পূর্ণ অনৈসলামিক। আমরা দিন শুরু করি দেরিতে আর রাতে জেগে থাকি। এটা মহাবিপদ। রাত জেগে থেকে সকালে দেরি করা ঘুম থেকে উঠার ফলে আমাদের দিনের পর দিন ফজরের সালাত মিস হচ্ছে। স্টুডেন্ট লাইফে এটা আরও বড় সমস্যা। আমরা যদি সাহাবীদের লাইফ স্টাইল দেখি তাহলে দেখব যে তারা সকল কাজ দিনেই সম্পন্ন করতেন। রাসূল (স) আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলেন যে তার উম্মাতকে যেন সকালের প্রথম ভাগে বরকত দেয়া হয়। এবং আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করেছিলেন। অনেক সময় মনে হতে পারে যে রাতে তো আমার পড়া ভাল হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ভোরে পড়লে পড়া ভাল হয়। আরেকটি জিনিস হচ্ছে রাতের বেলা ফিতনার সুযোগ অনেক বেশি। তাই আমরা চেষ্টা করব যেন রাতের বেলা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে ভোরে উঠার চেষ্টা করা। ২/৩ দিন চেষ্টা করলেই ইনশাআল্লাহ তা অভ্যাসে পরিণত হবে।
৩. নিয়মিত কুরআন চর্চা করাঃ প্রতিদিন কুরআন তিলাওয়াত করা ও কুরআনের পিছনে সময় ব্যয় করা উচিত। তাহলে এই কুরআনই আমাদের গুনাহ থেকে টেনে তুলবে।
৪. সালাতকে সুন্দর করাঃ আমাদের চেষ্টা করতে হবে সালাতকে সুন্দর করতে হবে। আল্লাহ বলেছেন যে “নিশ্চয়ই সালাত মানুষকে মন্দ ও অশ্লীল কাজ হতে দূরে রাখে।”
৫. আল্লাহর সাহায্য চাওয়াঃ গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা আল্লাহর সাহায্য ছাড়া সম্ভব নয়। আল্লাহ যদি সাহায্য করেন তাহলে তা সোজা হয়ে যায়। এইজন্য ইউসুফ (আ) কে যখন সেই সুন্দরী উচ্চ বংশীয় মহিলা খারাপ কাজের জন্য আহ্বান করল তখন তিনি একজন নবী ও দৃঢ় চরিত্রের হওয়া সত্ত্বেও সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন।
৬. গুনাহ ও গুনাহের কুফল সম্পর্কে জানাঃ আমাদেরকে জানতে হবে কোন কোন কাজ গুনাহ। আজকে মানুষ জানেই না কোন কাজ গুনাহ। এছাড়া আমাদের গুনাহের কুফল সম্পর্কেও জানতে হবে। তাহলে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা সহজ হবে। গুনাহের কুফল অনেক। যেমনঃ হিদায়াত থেকে বঞ্চিত হওয়া, জ্ঞান কমে যাওয়া, স্মরণশক্তি কমে যাওয়া, আল্লাহর সাথে দূরত্ব সৃষ্টি হয়, জীবন জটিল হয়ে পড়ে ইত্যাদি।
৭. বিকল্প ব্যবস্থা করাঃ হারাম বিনোদন বাদ দিয়ে আমরা হালাল বিনোদন যেমন বিভিন্ন হালাল খেলাধূলা করা যেতে পারে। যারা মুভি দেখেন তারা বিভিন্ন ডকুমেন্টরি দেখতে পারেন। এভাবে হারামের হালাল বিকল্প খুঁজতে হবে।
৮. দৈনন্দিন জিকর করাঃ দৈনন্দিন বিভিন্ন জিকর রয়েছে যেগুলো গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। যেমন খাওয়ার আগে বিসমিল্লাহ বলা। ঘর থেকে বের হওয়ার আগে বলা “বিস্মিল্লাহি তাওাক্কালতু আলাল্লাহি লা হাওলা কুও্বাতা ইল্লা বিল্লাহ।” এভাবে সব কাজের আগে দোয়া রয়েছে যেগুলো চর্চা করলে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা যায়।
৯. কথা বলা, খাওয়া, মেলামেশা করা এগুলোর পরিমাণ কমানঃ কথা কম বলা কষ্টকর। কিন্তু যে বেশি কথা বলে তার গুনাহ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। রাসূল (স) বলেছেন যে আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস করে সে হয় ভাল কথা বলুক নাহয় চুপ থাকুক। কারন কথা বলতে বলতে এমন গুনাহ হয়ে যেতে পারে যার শাস্তি খুব সাংঘাতিক। এছাড়া অপ্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে ব্যস্ত না হওয়া। এছাড়া বেশি না ঘুমান ও বেশি না খাওয়া। অর্থাৎ হালাল কাজ গুলোর মধ্যেও সীমারেখা টানা।
১০. ধৈর্য ধারণ করাঃ আমাদের ধৈর্যের খুব অভাব। কিন্তু গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে হলে ধৈর্য ধরতে হবে। ধৈর্য আসবে চেষ্টা করার মাধ্যমে। একজন লোক হয়ত আপনার পায়ে পাড়া দিয়ে চলে গেল আপনি চেষ্টা করুন তাকে কিছু না বলতে। আর ধৈর্য আয়ত্ত করার সবচেয়ে বড় সুযোগ হল রামাদান মাস।
(সংগৃহীত)
by lostmodesty | Aug 31, 2018 | ব্লগ
বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম
আর ত্রিশ মিনিট পরে আপনার ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইলেক্ট্রনিক্স -২ পরীক্ষা । আপনি ওপ-এম্প এর সার্কিট ঠিকমতো সলভ করতে পারেননা , টাইমারের সার্কিট দেখলে মনে হয় কাগজে অর্থহীন কিছু আকাআঁকি । তারওপর কোর্স টিচার মারাত্মক রকমের হাড় কিপটা । নাম্বার দিতেই চান না , আর সেই সাথে তাঁর অতীত সুনাম আছে প্রশ্নপত্র কঠিন করে স্টুডেন্টদের সাথে “মজা” নেওয়ার । নিরুপায় হয়ে পরীক্ষায় আসতে পারে এমন কিছু প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ বানিয়ে আপনি মোবাইলে নিয়ে নিলেন । কিন্তু পরীক্ষার হলে মোবাইল নিয়ে যাওয়া নিষেধ । কোন স্টুডেন্টের কাছে মোবাইল পেলেই তৎক্ষণাৎ সেই স্টুডেন্টকে পরীক্ষার হল থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হয় । সেই সাথে একবছর ড্রপ । তো এরকম একটা ভয়াবহ পরিস্থতিতে, আপনি পকেট থেকে আলতো করে মোবাইল বের করে টুকলিবাজি শুরু করেছেন পরীক্ষার হলে । স্বাভাবিকভাবেই আপনি প্রচণ্ড অস্থিরতায় ভুগছেন । ফ্যানের নীচে থেকেও আপনার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে গেছে । হার্টবিট বেড়ে গেছে । আপনি সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে আছেন এই বুঝি স্যারের হাতে ধরা খেয়ে গেলেন ।
আপনার অন্তর বড় অশান্ত , বড় অস্থির ।
সুবহানআল্লাহ, একটু চিন্তা করে, দেখুন দুনিয়ার সামান্য মানুষের বানানো আইন ভাঙ্গার কারণে , খুব ছোট একটা অপরাধ করার কারণেই আপনার মনের শান্তি কর্পূরের মতো উবে গেছে । তাহলে আকাশ ও জমীনের সৃষ্টিকর্তা , যিনি একেবারে শূন্য থেকে সবকিছু সৃষ্টি করেছেন সেই মহিমান্বিত আল্লাহর (সুবঃ) আইন প্রতিনিয়ত ভেঙ্গে , প্রতিনিয়ত আল্লাহর সঙ্গে বিদ্রোহ করে আপনি কী করে অন্তরে শান্তি পাবেন? বলুন, কীভাবে শান্তি পাবেন ?
আল্লাহ (সুবঃ) আপনাকে বলেছিলেন দৃষ্টি সংযত করতে , চোখের হেফাজত করতে ।
“……মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।”
(সূরা নূর : ৩০)
আপনি প্রতিনিয়ত তাঁর সেই আদেশকে বুড়ো আঙ্গুল দেখাচ্ছেন । রাস্তায় মেয়েদেরকে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছেন , বন্ধুদের সঙ্গে মেয়েদের ফিগার নিয়ে থিসিস করছেন , গভীর রাতে আপনার মোবাইলের স্ক্রিন নীল হয়ে যায়, সার্ফিং করে বেড়ান এক্সরেটেড সব ওয়েবসাইটে, পর্নস্টার আর আইটেম গার্লরা আপনার ড্রিম গার্ল, স্বপ্নের রাজকন্যা । আপনি কিভাবে শান্তি পাবেন ?
বন্ধু , আড্ডা , গান , জিএফ, বিএফ , সিরিয়াল ,ফেসবুকিং, সেলফি , ডিএসএলআর, কেএফসি, পিৎজাহাট এগুলো নিয়েই আপনার কেটে যাচ্ছে অষ্টপ্রহর । ভাবছেন ,সুখেই আছি । বুকে হাত রেখে একবার সত্যি করে বলুন তো, আপনি কী আসলেই শান্তিতে আছেন, সুখে আছেন ?
কেন এক বিকেল বেলা ঘুম থেকে উঠে শেষ বিকেলের আলোয় অজানা কারণে আপনার মন খারাপ হয়ে যায়? গভীর রাতে কি যেন ভেবে আপনার চোখ ভিজে যায় জলে । দলা বাধা কষ্টগুলে ভিড় জমায় বুকের ভেতর । অন্তরটা খাঁ খাঁ করে । কি যেন নেয় আপনার । কোথায় যেন একটা অপরিপূর্ণতা । কোথায় যেন কিসের একটা অভাব । জীবনটা বড্ড বেশী জটিল মনে হয় ।
আইটেম গার্লদের কোমর দোলানি আর দেহের ভাঁজ দেখে আপনার মন কি অস্থির , অশান্ত হয়ে যায় না ? মনের ভেতরের পশুটা কি আপনাকে কুঁরে কুঁরে খায় না? প্রত্যেক বার পর্ন মুভি দেখার পর , মাস্টারবেট করার পর আপনার কি মরে যেতে ইচ্ছে করে না ? মনে হয়না কেন করলাম , কেন করলাম , কেন কেন …… ?
কিসের নেশায় ডুবে আছেন ভাই আপনি ? কিসের নেশায় ?
পর্নস্টারের নিটোল দেহ , জিএফের ‘মনে ঝড় তোলা চোখ, আইটেম গার্লদের লাস্যময়ী হাসি ? আপনি এদেরকে কি একেবারে নিজের মতো করে কখনো পাবেন ? পাবেন না । এরা তো ইলিউশান ছাড়া কিছুই না । এরা একদিন বুড়িয়ে যাবে । দেহে অনেক ভাঁজ পড়বে , চামড়া কুচকিয়ে যাবে, দাঁত পড়ে যাবে , চোখ ধূসর হয়ে যাবে , চুল পাটের শনের মতো হয়ে যাবে । সবশেষে মাটির নীচে পোকা মাকড়ে খুবলে খুবলে খাবে এদের দেহ , গলে পচে দুর্গন্ধ ছড়াবে ।
এতেই আপনার এত আকর্ষণ! এদের কারণেই আপনি সেই জাহান্নামের আগুণকে তুড়িমেরে উড়িয়ে দিচ্ছেন , যা অন্তর পর্যন্ত পুড়িয়ে ফেলবে আর যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর ।
আপনি ভুলে যাচ্ছেন আপনার সেই “আয়তনয়না” জান্নাতি স্ত্রীর কথা যিনি আপনার জন্য লক্ষ কোটি বছর ধরে অপেক্ষা করে আছেন । যাঁর মাথার স্কার্ফ এই দুনিয়া এবং আকাশের মধ্যবর্তী সবকিছুর থেকেও উত্তম । প্রবাল ও পদ্মরাগ সদৃশ জান্নাতের স্ত্রীদের সৌন্দর্যের ব্যাপারে স্বয়ং আল্লাহ (সুবঃ) সার্টিফিকেট দিয়েছেন ।
জান্নাতেও ঝুম বৃষ্টি হবে , আপনার জান্নাতি স্ত্রীকে নিয়ে রিকশায় বসে আপনি লক্ষ কোটি বছর ধরে বৃষ্টি বিলাস করতে পারবেন , হা করে জ্যোৎস্না গিলতে পারবেন , শেষ বিকেলের মরে আসা নরম হলুদ আলোয় দুজন দুজনার চোখের দিকে তাকিয়ে কাটিয়ে দিতে পারবেন হাজার হাজার বছর ।
দুজনে ঘুরে বেড়াবেন জান্নাতের বাগানে । মাথার উপর থেকে ঝরে পড়বে গাছের ঝরা পাতা । আপনাদের শরীরে আলতো পরশ বুলিয়ে দিয়ে যাবে । আপনার স্ত্রী আপনার কাঁধে মাথা রেখে হাঁটবে , আপনি তাঁকে শোনাবেন জান্নাতের কোন প্রেমের গান , পশু পাখি অবাক হয়ে শুনবে আপনার গান । এত সুন্দর গান কে গায় তা দেখার জন্য চাঁদটাও হয়তো উঁকি দিবে আকাশে ।
আমি আপনি কত পাগল , কত পাগল !!!
……”নারী জাতির প্রতি ভালোবাসা , সন্তান সন্ততি , কাঁড়ি কাঁড়ি সোনা রুপা , পছন্দসই ঘোড়া , গৃহপালিত জন্তু ও জমীনের ফসল মানব সন্তানের জন্য লোভনীয় করে রাখা হয়েছে । অথচ এ সবই হচ্ছে পার্থিব জীবনের কিছু ভোগের সামগ্রী মাত্র । উৎকৃষ্ট আশ্রয় তো একমাত্র আল্লাহ্র কাছেই রয়েছে ।
(সুরা আলে ইমরান , আয়াত -১৪)
পর্নমুভির ফ্যান্টাসি , আইটেম গার্লদের গ্ল্যামারে কোন শান্তি নেই । এগুলো আপনার অন্তরকে ক্ষত বিক্ষত করে তোলে । শান্তি নেই ঝুম বৃষ্টিতে ‘জিএফের” সঙ্গে একি রিকশাতে পাশাপাশি বসে কাকভেজা হয়ে ভিজাতে, চাঁদনী পসর রাতে হা করে জ্যোৎস্না গিলাতে । এগুলো আপনাকে ক্ষনিকের আনন্দ দিতে পারে কিন্তু শান্তি দিতে পারে না ।
শান্তি আছে , আল্লাহর আদেশ মেনে দৃষ্টি হেফাজত করার মধ্যে । শান্তি আছে আপনার রবকে সিজদাহ করার মধ্যে , রবের সামনে রাতে একাকী দাঁড়িয়ে চোখের পানি ফেলাতে । নিজের নফসের অবাধ্যতা করে রবের দাসত্ব করাতে । ভাই এই শান্তি অমূল্য । দুনিয়ার কোন কিছুর বিনিময়ে এই শান্তি পাওয়া যায় না। একবার এই শান্তি পেলে আপনি বারবার চাইবেন এই শান্তি পেতে । একবার চেষ্টা করেই দেখুন না । একটা সপ্তাহ আল্লাহ্র নফরমানী না করে চোখের হেফাজত করে দেখুন না ফলাফল কি হয় । শান্তি না পেলে ভাল না লাগলে আবার আগের লাইফ স্টাইলে ফিরে গেলেন । একবার তো চেষ্টা করে দেখবেন ।
“ ………অবশ্যই আল্লাহর স্মরণে হৃদয় প্রশান্ত হয়।” (আল কুর‘আনঃ সূরা ১৩, আয়াত ২৮).
by lostmodesty | Aug 31, 2018 | ব্লগ
বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম
সন্ধ্যার মরে আসে রোদ চিরকাল আমার মন খারাপ করে দেয় । মাঝে মাঝে সারাদিন ঝুম বৃষ্টি হয়। সন্ধ্যার দিকে বৃষ্টি কিছুটা ক্লান্ত হয়ে টিপ টিপ করে পড়ে বা কখনো সম্পূর্ণ থেমে যায় । ধূসর একটা আলোয় ভরে যায় চারপাশ । কেউ খেয়াল করে , কেউ করে না ।নারিকেল আর গগনশিরীষের বৃষ্টি ভেজা পাতা সেই ধুসর আলোতেও চিকচিক করে । দূরের আকাশে কালো একটা বিন্দুর মতো সোনালী ডানার চিল ভেসে বেড়ায় । করুন সুরে ডেকে ওঠে মাঝে মাঝে । চিরকাল খামখেয়ালী জীবন যাপন করা আমি উদাস হয়ে যায় । হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ইচ্ছে করে ।
কত বেদনা!
কত বিচ্ছেদ!
কত কথা রাখতে না পারা !

কথা দিয়েছিলাম আমার রব্বকে, ইয়া রব্ব! এবারের মতো মাফ করে দাও । আর কোনদিন একা রুমে ল্যাপটপে বসবনা ।
সেই কথা রাখতে পারিনি বহুবার আমার এই ২৩ বছরের জীবনে ।
বহুবার নির্লজ্জের মতো অন্ধকার জগতটাতে ফিরে গেছি । আর তারপর আক্ষেপের অশ্রু আমাকে ঘুম পাড়িয়েছে। অন্ধকার এত কেন টানে আমায়?
রব্বের কাছে দু’হাত তুলে চেয়েছিলাম, “ইয়া রব্ব! ভালো একটা ভার্সিটিতে চান্স পাইয়ে দাও”
আমার রব্ব আমাকে নিরাশ করেননি ।
ভার্সিটিতে আসার পর ভুলে গেলাম আমার রব্বকে । বন্ধু, আড্ডা,গান, ফেসবুকিং, চ্যাটিং এর ভীড়ে হারিয়ে ফেললাম আমার রব্বকে ।
আমার রব্ব কিছুই বলেননি আমাকে । কোন শাস্তিও দেননি ।
মনে রঙ লাগার বয়সে মনে ধরেছিল এক বালিকাকে । কালো হরিনী চোখের সেই বালিকা যখন সবুজ ওড়না মাথায় দিয়ে আড়চোখে তাকাতো, আমি তখন অভিকর্ষ বলকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে উড়াল দিতাম আকাশে। ভালোবাসা ছুঁয়ে ফেলতো আকাশ । পৃথিবীর সব সুখ চলে আসতো আমার দখলে ।
রব্বকে কথা দিয়েছিলাম, কখনো হারাম সম্পর্কে জড়াবো না । হারাম সম্পর্কে জড়ায়নি কখনো সেটা ঠিক , কিন্তু চেষ্টা তো কম করিনি ! রব্ব আমাকে দয়া করে প্রত্যেকবার ফিতনা থেকে বাঁচিয়েছেন ।
দুটো সিজদাহ্ কি কখনো দিয়েছি রব্বের এই রহমতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য?
চাইলেই কি রব্ব পারেন না, আমার চোখদুটোর আলো কেড়ে নিতে ?
যে চোখ দিয়ে আমি গোগ্রাসে গিলি এক্সরেটেড মুভি গুলো?
যে চোখ দিয়ে আমি লুকিয়ে লুকিয়ে দেখি বালিকার রাঙ্গা রাজকন্যার মতো মুখটা ?
কোন মুখে দাঁড়াবো আমি আমার রব্বের সামনে, যেদিন আমার চোখ, আমার হাত,আমার পা, আমার কান , আমার ত্বক সাক্ষ্য দিবে আমার বিরুদ্ধে ? আমাকে এমন আমলনামা পড়তে দেওয়া হবে যেটা্তে আমার করা প্রত্যেকটা কাজ খুটিনাটি সহকারে লিখা আছে ?
সেদিন শুনছিলাম ইউসুফ (আঃ) এর অসাধারণ কাহিনী । চুড়ান্ত মাত্রার আল্লাহ্ভীতি, পবিত্র থাকার অদম্য ইচ্ছা ! ক্রীতদাস ইউসুফ(আঃ) এর ওপর ক্রাশ খেয়ে ফেললেন তাঁরই মালিকের স্ত্রী । মহিলার অবশ্য করার কিছু ছিলনা, আল্লাহ্, ইউসুফ (আঃ)কে পৃথিবীর অর্ধেক রূপ যে দিয়েছিলেন । মহিলা,কিভাবে নিজেকে সামলাবে ? ইউসুফ (আঃ) কে ফাঁদে ফেলার চক্রান্ত আটা শুরু হল । ইউসুফ (আঃ) হাত তুললেন আল্লাহ্র কাছে , “ইয়া আল্লাহ্ ! এরা আমাকে যেদিকে আহব্বান করে তার চেয়ে কারাগারো আমার অধিক প্রিয় …’
জুলায়খা, ইউসুফ’র(আঃ) মালিকের স্ত্রী ছিল সুন্দরী,লাস্যময়ী সেই সঙ্গে তাঁর ওপর প্রভাবশীল। তারপরেও ইউসুফ (আঃ) ফিরিয়ে দিয়েছেন জুলায়খাকে । কতভাবেই না ইউসুফ (আঃ) কে প্রলোভন দেখানো হয়েছে । তারপরেও তাঁকে ভুলানো যায়নি ।
আর, আমি সামান্য কোন মেয়ের চাহনিতেই কুপোকাত হয়ে যায় । জুলায়খাদের এসে আমাকে প্রলোভন দেখাতে হয়না । আমি নিজেই ভার্চুয়াল জুলায়খাদের আড্ডায় হানা দেই । ঘন্টার পর ঘন্টা পড়ে থাকি নীল রঙের সেই জগতটাতে । বাস্তবে উনার মতো অবস্থায় পড়লে কি হাল হতো আমার !
ইউসুফ (আঃ) তো আমার মতোই রক্ত মাংসের মানুষ ছিলেন । পুরোপুরি তার মতো হতে নাই’বা পারলাম , কিছুটা যদি হতে পারতাম উনার মতো ! কিছুটা !
জানালার বাহিরের আকাশটা আজ অনেক কালো । মেঘ জমে একাকার শীতল একটা বাতাসে সজনে গাছের সাদা ফুল গুলো তিরতির করে কাপছে । বোধহয় একটু পরেই ঝুম বৃষ্টি নামবে ।
ইশ! আমার বুকের মধ্যেও যদি অনুতাপের মেঘ জমতো , অশ্রু হয়ে অঝোরে ঝরে পড়তো ভারী ভারী সেই মেঘগুলো ! আমার অন্তর তো কঠিন হয়ে গেছে । অনেক কঠিন । পাথরের চেয়েও কঠিন ।
পাথর ফেটেও তো মাঝে মাঝে ঝরনা বের হয়ে আসে । কিন্ত আমার অন্তর তো আল্লাহর ভয়ে আল্লাহর স্মরনে বিগলিত হয় না । শেষ কবে সলাতে কেঁদেছি মনে আছে ? শেষ কবে ঐ জঘন্য পাপ কাজটা করার পর জায়নামাজে সিজদাহয় লুটিয়ে পড়ে ক্ষমা চেয়েছি ?
কতটুকু ভালোবাসেন আল্লাহ আমাদেরকে ? কতটুকু ?
এক মায়ের ছেলে হারিয়ে গিয়েছে । অনেক খোঁজাখুজির পরেও ছেলেকে পাওয়া গেলনা । মায়ের পাগল হতে বাকী । এমন সময় হারানো ছেলেকে পাওয়া গেল । মা পরম মমতায় জড়িয়ে ধরলেন ছেলেকে। ভালোবাসার অশ্রু তার দুগাল বেয়ে অঝোরে নামছে । রোদ পড়ে চিকচিক করছে মুক্তোর মতো । এই মায়ের পক্ষে কি এই অবস্থায় সাত রাজার ধন এই ছেলেকে আগুনে ফেলে দেওয়া সম্ভব হবে ?
আল্লাহ আমাদেরকে এই মায়ের চেয়েও অনেক অনেক গুন বেশি ভালোবাসেন । বাবামার অবাধ্য হলে তাদের কথা না শুনলে, তাদের মনে কষ্ট দিলে সন্তান্দের প্রতি তাদের ভালোবাসায় ভাটা পড়ে যায়
কিন্তু আল্লাহর ভালোবাসায় কখনো ভাটা পড়ে না । আমি যখন আল্লাহকে স্মরন করি , আল্লাহও আমাকে স্মরন করেন । যখন তাকে ভুলে যাই, তার অবাধ্যতা করি তখনো তিনি আমাকে মনে করেন । আমার জন্য ক্ষুধার খাদ্য পাঠিয়ে দেন , তৃষনার পানি পাঠিয়ে দেন , বুক ভরে শ্বাস নিতে দেন মুক্ত বাতাসে ।
অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন কখন আমি তাকে ডাকবো । মনের অজান্তেই একবার ইয়া রব্ব বলে ডাক দিলেই তিনি আনন্দিত হয়ে সাড়া দেন – ইয়া আবদি! হে আমার বান্দা বলো , বলো তোমার কি চাই ?
আমি যখন আল্লাহর দিকে এক ধাপ এগিয়ে যায় আল্লাহ আমার দিকে দশ ধাপ এগিয়ে আসেন , আমি আল্লাহর দিকে হেঁটে গেলে তিনি দৌড়িয়ে আসেন । আল্লাহ সুযোগ খোঁজেন আমাকে ক্ষমা করে দেবার । অজুর পানির মাধ্যমে তিনি আমার পাপগুলো ঝরিয়ে দেন, দুই সলাতের মাধ্যমে মাঝের সময় গুলোতে করা পাপ গুলো ক্ষমা করে দেন । তিনি রাতে ক্ষমার হাত বাড়িয়ে দেন দিনের পাপীদের জন্য , আর দিনে ক্ষমার হাত বাড়িয়ে দেন রাতের পাপীদের জন্য ।
তিনি ঘোষনা দিয়ে রেখেছেন কেউ যদি তার সঙ্গে আকাশ সমান উঁচু পাপ নিয়েও দেখা করে কিন্তু শিরক না করে তাহলে তিনি তাকে ক্ষমা করে দিবেন । তারপর তিনি প্রবেশ করাবেন এমন এক জান্নাতে [ http://bit.ly/2eXDZPI ] যা কোন চোখ দেখেনি , কোন অন্তর চিন্তাও করেনি ।
[http://bit.ly/2f24Adb]
“হে আমার বান্দাগন ! যারা নিজেদের উপর বাড়াবাড়ি করেছো তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়োনা, নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেবেন । তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও করুনাময় । [আয-যুমারঃ ৫৩]
আমার সলাত, আমার সিজদাহ, আমার তাসবীহ কোন কিছুরই কি প্রয়োজন আছে আল্লাহ’র ? আমি তো ক্ষুদ্র, অতি নগন্য এক সৃষ্টি । এই পৃথিবীর তুলনায় আমি কত ক্ষুদ্র । আমাদের এই পৃথিবীর তুলনায় সূর্য প্রায় তের লক্ষগুন বড় । সূরযের পর আমাদের পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে যে নক্ষত্র রয়েছে তার নাম Proxima Centauri . পৃথিবী থেকে যার দূরত্ব প্রায় ৪.৫ আলোক বর্ষ ।
আলোর বেগ সবচাইতে বেশী । আলো এক সেকেন্ডে ৩ লক্ষ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে ফেলে । আর পৃথিবীথেকে এই আলোরই Proxima Centauri তে যেতে সময় লাগবে ৪.৫ বছর । ভাবা যায় কতদূরে আছে Proxima Centauri!
এরকম ১০০ বিলিয়ন নক্ষত্র রয়েছে আমরা যে গ্যালাক্সিতে রয়েছি সেই ‘ মিল্কি ওয়েতে’। মহাবিশ্বে আবার ১০০ বিলিয়নের মতো গ্যালাক্সি রয়েছে । ২০০৪ সালে বিজ্ঞানীরা একটি নতুন গ্যালাক্সি আবিষ্কার করতে সক্ষম হন । যার নাম তাঁরা দেন ABEL 135 IR 116 . এই বাবাজি পৃথিবী থেকে ১৩.২ বিলিয়ন দূরে অবস্থিত ।
আর এই সব কিছুই প্রথম আসমানে । দ্বিতীয় আসমান প্রথম আসমানের তুলনায় কত বিশাল সেটা ব্যাখ্যা করার জন্য হাদীসে মরুভুমি এবং একটা আংটির কথা বলা হয়েছে । মরুভূমির বিশাল বুকে পড়ে থাকা একটি আংটি মরুভূমির তুলনায় যতটা ক্ষুদ্র । প্রথম আসমান দ্বিতীয় আসমানের তুলনায় ততোটুকুই ক্ষুদ্র । এভাবে দ্বিতীয় আসমান তৃতীয় আসমানের তুলনায় ক্ষুদ্র , তৃতীয়, চতুর্থ আসমানের তুলনায় ক্ষুদ্র । এভাবে চলতে চলতে সপ্তম আসমানে যেয়ে ঠেকে ।
[http://bit.ly/2fpWjUE ]
সুবহানাল্লাহ্! কত বড় এই মহাবিশ্ব । এই মহাবিশ্বের প্রতিটি কোণায়, চিপায় চাপায় সবখানে ফিরিশতারা রয়েছেন আল্লাহকে সিজদাহরত অবস্থায় । আমার সিজদাহ আল্লাহর কি কাজে আসবে ? হাদীসে কুদসীতে এসেছে ,” আল্লাহ বলছেন, “হে মানুষ এবং জিন! তোমরা শুনে নাও তোমাদের সবাই যদি সবচেয়ে বিশুদ্ধ হৃদয়ের অধিকারী হয়ে যাও তাহলে আমার রাজত্বের কিছুই বৃদ্ধি হবে না । যদি তোমরা সবাই সবচেয়ে পাপী হৃদয়ের অধিকারীও হয়ে যাও তাহলে আমার রাজত্বের কিছুই বৃদ্ধি হবে না । তোমাদের সবার চাওয়াও যদি পূরন করে দেই, তাহলেও আমার কাছে যা আছে তার কিছুই ফুরাবে না ।
[http://bit.ly/2dQE4XX ]
আমার কোনকিছুরই প্রয়োজন নেই তাঁর। কোনকিছুরই প্রয়োজন নেই । রাজাদের রাজা তিনি, বাদশাহদের বাদশাহ । তারপরেও আল্লাহ আমাকে এতোটা ভালোবাসেন , আমাকে ক্ষমা করে দেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকেন, আমার জন্য আরশের ওপর থেকে প্রতি রাতে প্রথম আসমানে নেমে আসেন , আমার জন্য জান্নাতে এত এত নিয়ামত প্রস্তুত করে রেখেছেন ।
আর কতকাল এই আল্লাহর সঙ্গে দস্যুতা করে বেড়াবো ? আর কতকাল এই আল্লাহকে ভুলে থাকবো ? আর কতকাল নিজের নফসের কাছে পরাজিত হব?
আল্লাহর স্মরনে অন্তর বিগলিত হবার সময় কি এখনো আসে নি ?
আবু বকর (রাঃ) ছিলেন, নবীদের (আঃ) পর এই জমীনের বুকে হেঁটে বেড়ানো সবচেয়ে পুন্যবান মানুষ । আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর কাছে বেশ কয়েকবার জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলেন তিনি । তারপরেও সলাতে আল্লাহর ভয়ে তিনি কাঁদতেন । উমারের (রাঃ) মতো ক্ষ্যাপাটে লোকও সলাতে আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে শিশুর মতো কাঁদতেন । উসমান ইবনে আফফান (রাঃ) তো কাঁদতে কাঁদতে নিজের দাড়ি ভিজিয়ে ফেলতেন । দুইজনেই দুনিয়াতে থাকতে জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলেন ।
আমি কি বিশাল এক পাপী। সন্ত্রাসী , আল্লাহদ্রোহী । তারপরেও আমার চোখ শুষ্ক ।
অভিশপ্ত আমার দু’চোখ।
অভিশপ্ত ।
উঠো, হে পাপাত্মা উঠে দাঁড়াও তোমার রব্বের সামনে নতমুখে । সব জানেন তিনি , সব । গোপনে রাতের আঁধারে একা একা তুমি যা করেছিলে সব জানেন তিনি । তারপরেও তিনি অপেক্ষা করে আছেন তোমার জন্য ।তিনি তোমাকে তাঁর সামনে নতমুখে দেখতে চান । তোমাকে ক্ষমা করে দিয়ে তিনি তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন । আহ! জান্নাতে ।
হে পাপাত্মা, উঠে দাঁড়াও । আর একবার তোমার রব্বকে কথা দাও তুমি ভালো হয়ে যাবে । শিশুর মতো অঝোরে কাঁদো , এই চোখের পানি তোমার রব্বের কাছে সব চাইতে প্রিয় ।
কাঁদো হে পাপাত্মা কাঁদো ।